কিশোরীকে ধর্ষণ ও হত্যা: মাদারীপুরে ইজিবাইক চালকের মৃত্যুদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক মাদারীপুর
প্রকাশঃ 22 অক্টোবর 2025, 08:49 অপরাহ্ন
কিশোরীকে ধর্ষণ ও হত্যা: মাদারীপুরে ইজিবাইক চালকের মৃত্যুদণ্ড

মাদারীপুর সদর উপজেলায় এক মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে মো. সাজ্জাদ হোসেন খান (৫৫) নামে এক ইজিবাইক চালককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে মাদারীপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শরীফ এ এম রেজা জাকের আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) শরীফ সাইফুল কবীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত সাজ্জাদ হোসেন খান মাদারীপুর সদর উপজেলার পূর্ব খাগদী এলাকার বাসিন্দা। তিনি এর আগেও একটি শিশু হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ছিলেন এবং ২০১১ সালে মুক্তি পান।

বিজ্ঞাপন

মামলার বিবরণ:

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৩ জুলাই মাদারীপুর শহরের পূর্ব খাগদী এলাকার একটি পরিত্যক্ত পুকুর থেকে অজ্ঞাত এক কিশোরীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন তার বাবা লাশটি শনাক্ত করেন। নিহত ওই কিশোরীর (১৫) উপজেলার বলাইরচর শামসুন্নাহার বালিকা মাদ্রাসার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে মাদারীপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) শরীফ সাইফুল কবীর জানান, মামলার তদন্তের এক পর্যায়ে র‍্যাব ইজিবাইক চালক সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাজ্জাদ মেয়েটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করার কথা স্বীকার করেন এবং পরে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা:

পিপি আরও বলেন, “সাজ্জাদ তার জবানবন্দিতে জানান, ২০১৯ সালের ১১ জুলাই বৃষ্টির দিনে ওই কিশোরী চরমুগরিয়া যাওয়ার জন্য তার ইজিবাইকে ওঠেন। ইজিবাইকে অন্য কোনো যাত্রী না থাকার সুযোগে সাজ্জাদ জোর করে মেয়েটিকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে তিনি প্রথমে মেয়েটিকে ধর্ষণ ও পরে হত্যা করেন। এরপর লাশের সঙ্গে বিদ্যুতের তার দিয়ে কয়েকটি ইট বেঁধে পুকুরে ফেলে দেন।”

এর দুই দিন পর লাশটি ভেসে উঠলে এলাকাজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ওই কিশোরীকে হত্যার প্রতিবাদে এবং দ্রুত বিচারের দাবিতে এলাকাবাসী মানববন্ধন ও বিক্ষোভসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন।

পিপি শরীফ সাইফুল কবীর জানান, দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন।

রায়ে সন্তোষ:

রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে নিহত কিশোরীর বাবা বলেন, “হত্যাকারী আইনের কাছে জবাবদিহি করেছেন। এই রায়ের মাধ্যমে আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি।”

সম্পর্কিত- ধর্ষণ হত্যা
0%
0%
0%
0%