আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৬.৫ শতাংশের নিচে নেমে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর

ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় মূল্যস্ফীতি আরও কমে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
মঙ্গলবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত বাজেটোত্তর এক সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর বলেন, “এই বাজেটে (২০২৫-২৬ অর্থবছর) গড় মূল্যস্ফীতি ৬.৫ শতাংশে রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে আমার ব্যক্তিগত মত হচ্ছে, মূল্যস্ফীতি আরও কমবে।”
তিনি বলেন, “মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রা বিনিময় হার ছিল একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তবে এ ক্ষেত্রে ইতোমধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে।”
গভর্নর জানান, “বর্তমানে মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার অনেক দিন ধরে ১২২-১২৩ টাকার মধ্যে স্থিতিশীল রয়েছে। এটি আমাদের জন্য স্বস্তিদায়ক এবং আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি দ্বি-অঙ্ক থেকে কমে এসে এখন প্রায় ৮.৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে এবং অখাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি ১১.৫ শতাংশ থেকে কমে বর্তমানে ৯ শতাংশের কিছু উপরে। এই নিম্নমুখী ধারা আরও অব্যাহত থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”
আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেল ও গ্যাসের দাম বাড়ার সম্ভাবনা আপাতত নেই এবং বাংলাদেশের রপ্তানি সক্ষমতাও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক কড়াকড়ি আর্থিক নীতি (tight monetary policy) বজায় রেখেছে।
“এই সম্মিলিত প্রচেষ্টা আগামী অর্থবছরের বাজেটে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও নিচে মূল্যস্ফীতি নামিয়ে আনতে সহায়ক হবে,”—যোগ করেন তিনি।
অর্থসচিব মো. খৈরুজ্জামান মুজমদার জানান, প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যাংক খাত থেকে ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা আগের পরিকল্পনার চেয়ে কমিয়ে আনা হয়েছে, যাতে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগে ‘ক্রাউডিং আউট’ (Crowding Out) না ঘটে।
তিনি বলেন, “ব্যাংক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা আগামী বাজেটে ১.০৪ ট্রিলিয়ন টাকা রাখা হয়েছে। পাশাপাশি সরকার সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং বিকল্প উৎস থেকে অর্থায়নের পরিকল্পনাও রয়েছে, যেমন—অ-ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ।”
প্রশ্নের জবাবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (NBR) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান জানান, শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে (Labour Welfare Fund) নতুন করে কোনো কর আরোপ করা হয়নি।