শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন, ১৬ জুন পরবর্তী শুনানি

                   
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন
                 
নিজস্ব প্রতিবেদক
সংশোধনঃ জুন 1, 2025 8:46 অপরাহ্ন
                       
                           

ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। আজ এই অভিযোগ আমলে নেওয়ার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়, যা সরাসরি সম্প্রচার হয় টেলিভিশন, ইউটিউব ও ফেসবুকের মাধ্যমে—এবং লাখো মানুষ তা সরাসরি প্রত্যক্ষ করেন।

চিফ প্রসিকিউটর শুনানির শুরুতেই বলেন, “এই বিচার কোনো প্রতিশোধ নয়, এটি ভবিষ্যতের জন্য একটি প্রতিজ্ঞা।” তিনি জানান, জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত গণহত্যার জন্য শেখ হাসিনাই প্রধান নির্দেশদাতা ছিলেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, আন্দোলনের সময় শেখ হাসিনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেন, এমনকি আন্দোলনকারীদের “মেরে ফেলার” কথাও বলেন।

প্রসিকিউশনের পক্ষে থেকে আরও জানানো হয়, শেখ হাসিনার “গ্যাং অব ফোর”—ওবায়দুল কাদের, আনিসুল হক, সালমান এফ রহমান এবং আসাদুজ্জামান খান কামালের পরিকল্পনায় গুম, খুন ও ধরপাকড়ের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘন চলত। এ চারজন শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা ছাড়তে নিরুৎসাহিত করেন এবং সেনাবাহিনী ও পুলিশের সমন্বয়ে আন্দোলন দমনের ছক তৈরি করেন।

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, “এ আদালত এমন এক সময়ের সাক্ষ্য বহন করছে যা ইতিহাসে দলিল হয়ে থাকবে। এ বিচার হবে আবেগশূন্য, তথ্যনির্ভর, নিরপেক্ষ ও ন্যায়সঙ্গত।”

শুনানি শেষে ট্রাইবুনাল আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়ে আগামী ১৬ জুন পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন। সেদিন শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে গ্রেপ্তার করে ট্রাইবুনালে হাজির করার নির্দেশও প্রদান করা হয়।

ট্রাইবুনালের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অভিযোগ গঠনের পরপরই নির্ধারিত হবে ঠিক কোন কোন অভিযোগে শেখ হাসিনার বিচার চলবে।

আইনজীবীরা মনে করছেন, আজকের এই শুনানি দেশের বিচার ব্যবস্থায় এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল। এই বিচার প্রক্রিয়া ভবিষ্যতের জন্য একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে এবং বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা ও গণতান্ত্রিক অঙ্গীকারকে আরও দৃঢ় করবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

প্রসিকিউশনের বার্তা ছিল স্পষ্ট: “এই বিচার কোনো প্রতিশোধ নয়, এটি ভবিষ্যতের জন্য একটি প্রতিজ্ঞা—একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার।”

                                             
0%
0%
0%
0%