ঈদের পরদিনও রক্তাক্ত গাজা: আগুনে পুড়ছে ভবন, ত্রাণ না থাকায় আকাশচুম্বী নিত্যপণ্যের দাম

ঈদের আনন্দ ভুলে আজও কান্নায় ভাসছে গাজা উপত্যকা। ঈদের পরদিন সকালে ইসরাইলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কাপছে গাজার আকাশ-বাতাস। গাজা শহরের সাবরা এলাকার একটি আবাসিক ভবনে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইসরাইলি বাহিনী। ভবনটির নিচতলা থেকে ছাদ পর্যন্ত আগুন জ্বলতে দেখা যায়। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়েন বহু মানুষ। কেঁদে উঠেছে শিশু ও বৃদ্ধরা। চারদিক জুড়ে শোনা গেছে উদ্ধারকর্মীদের করুণ আর্তনাদ।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আবুশারিয়া পরিবারের বাড়িতে ঈদের নামাজ শেষে সকালের খাবারের প্রস্তুতি চলছিল। ঠিক সেই সময়ই ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। ভবনটিতে ২৫ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। হামলার তীব্রতায় পুরো ভবনটি ধসে পড়ে। বেসামরিক এই পরিবারের অনেকেই এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন।
এদিকে, এই ধ্বংসযজ্ঞ ও ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায় নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদা। এক ভিডিও বার্তায় আল-কায়েদার ইয়েমেন শাখার নেতা সাদ বিন আতেফ আল আওলা যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি হুমকি দেন। তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও টেসলা প্রধান ইলন মাস্ককে হত্যা করার হুমকি দিয়ে বলেন, “তারা ইসরাইলকে সমর্থন দিয়ে নিরীহ মুসলিমদের রক্তপাতের সহযোগী হয়েছে।” ভিডিওটিতে ট্রাম্প, মাস্কসহ মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যানস, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেক্সেতের ছবিও প্রদর্শন করা হয়।
অপরদিকে, এক মাসেরও বেশি সময় ধরে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় জরুরি ত্রাণ ও খাদ্যসামগ্রী পৌঁছাতে না পারায় চরম খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আকাশচুম্বী হয়ে উঠেছে। গাজার বাজারে এক লিটার রান্নার তেলের দাম ৬০০০ টাকা, এক কেজি চিনির দাম ৭০০০ টাকা ছাড়িয়েছে। এক কেজি গুঁড়ো দুধ কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ১২২৪ টাকা, ময়দা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২১০০ টাকায়। এক কেজি লবণ ৭০০ টাকা, আলু ২৮০০ টাকা এবং টমেটো ১৫৭৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তারা এখন দুই বেলা খাবার জোগাড় করতেই হিমশিম খাচ্ছেন। শিশুদের দুধ কিংবা অসুস্থদের প্রয়োজনীয় ওষুধ কেনার সামর্থ্য অনেকেরই নেই।
জাতিসংঘ ও অন্যান্য মানবিক সংস্থাগুলো ইতোমধ্যে গাজায় অবিলম্বে ত্রাণ সরবরাহের জন্য আন্তর্জাতিক মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।