যুদ্ধের ছায়ায় ফিলিস্তিনে ঈদুল আযহা, গাজায় রক্ত আর ধ্বংসস্তূপের মধ্যে নামাজ

                   
যুদ্ধের ছায়ায় ফিলিস্তিনে ঈদুল আযহা, গাজায় রক্ত আর ধ্বংসস্তূপের মধ্যে নামাজ
                 
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশঃ জুন 6, 2025 8:40 অপরাহ্ন
                       
                           

বছর ঘুরে মুসলিম বিশ্বের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা এসে উপস্থিত হলেও ফিলিস্তিনে নেই কোনো উৎসবের আমেজ। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় এবারের ঈদও কাটছে বোমা, রক্ত আর আতঙ্কের মধ্যে।

ঈদের দিনেও গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর বর্বর হামলা চালানো হয়েছে। বহু মসজিদ আগেই ধ্বংস হয়ে গেছে বোমা হামলায়। কোনোরকমে দাঁড়িয়ে থাকা ক্ষতবিক্ষত দালানের মধ্যেই ঈদের নামাজ আদায় করেছেন গাজাবাসী। মাথার ওপর যে কোনো সময় বোমা পড়তে পারে—এই আশঙ্কা নিয়েই তারা আল্লাহর দরবারে সিজদাবনত হয়েছেন।

গাজায় চলমান যুদ্ধ শুরুর পর এটি চতুর্থ ঈদ, যা ফিলিস্তিনিরা কাটাচ্ছেন অনাহার, আতঙ্ক, মৃত্যু আর ধ্বংসের মাঝেই। ঈদের দিনে কোরবানি তো দূরের কথা, অধিকাংশ মানুষের কাছে নিজের জীবনটাই এখন সবচেয়ে বড় সংগ্রহ।

এক গাজাবাসীর কণ্ঠে ফুটে উঠেছে তাঁদের যন্ত্রণার চিত্র—
“আগে ঈদের সময় চারপাশ ছিল উৎসবমুখর, বাচ্চাদের নিয়ে যেতাম জামা কিনতে, বাড়ি বাড়ি কোরবানি হতো, রান্না হতো নানা রকম খাবার। এখন এসব কেবল স্বপ্ন।”

গাজার আগ্রাসনের প্রভাব পড়েছে ফিলিস্তিনের অন্যান্য অঞ্চলেও। পশ্চিম তীরে ঈদের বাজারেও ছিল বিমর্ষতা। কোরবানির পশুর দাম এতটাই বেড়ে গেছে যে অনেকেই কিনতে পারেননি। যুদ্ধের আগে যেখানে আধা কেজি মাংসের দাম ছিল ৩৫ সেকেল, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩০ সেকেলে।

পশ্চিম তীরের বাসিন্দারাও বলছেন, গাজায় যখন প্রতিনিয়ত তাদের স্বজাতির মানুষ মারা যাচ্ছে, তখন ঈদের আনন্দ অনুভব করার সুযোগ নেই।

এদিকে ঈদের দিনেও গাজার বিভিন্ন স্থানে ইসরাইলি বাহিনীর বর্বর হামলা অব্যাহত ছিল। বোমা হামলায় বিধ্বস্ত হয়েছে বহু এলাকা, বহু মানুষ আহত ও নিহত হয়েছে।

ফিলিস্তিনের জনগণের জন্য এবারের ঈদ ছিল আরেকটি করুণ স্মৃতি—একটি ঈদ যেখানে উৎসব নেই, আনন্দ নেই, আছে কেবল বেঁচে থাকার লড়াই, কষ্ট, ক্ষুধা আর কান্না।

                                             
0%
0%
0%
0%