নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচন: শেষ মুহূর্তের প্রচারে কুয়োমো, মামদানি ও স্লিওয়া

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনের শেষ পর্যায়ে প্রচারণা জোরদার করেছেন তিন প্রার্থী — সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো, ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী জোহরান মামদানি এবং রিপাবলিকান কার্টিস স্লিওয়া। আগামী মঙ্গলবার ভোটকে সামনে রেখে তারা ভোটারদের কাছে নিজেদের শেষ বার্তা তুলে ধরছেন।
নিজের শেষ নির্বাচনী বিজ্ঞাপনে কুয়োমো বলেন, “নিউইয়র্কের জীবন এখন কঠিন। যারা পদে গিয়ে শিখতে চাইবে, তারা এই সংকট সামলাতে পারবে না।” সরাসরি ইঙ্গিত করা হয়েছে ৩৪ বছর বয়সী মামদানির দিকে, যাকে তিনি ‘অভিজ্ঞতাহীন’ হিসেবে তুলে ধরছেন।
৬৭ বছর বয়সী কুয়োমো নিজেকে শহরকে সংকট থেকে রক্ষা করতে সক্ষম একমাত্র ব্যক্তি দাবি করছেন। তিনি রিপাবলিকান ভোটারদেরও বোঝানোর চেষ্টা করছেন যে, স্লিওয়ার পরিবর্তে তাকে ভোট দেয়াই কার্যকর সিদ্ধান্ত।
ফক্স বিজনেসে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কুয়োমো বলেন, জন্ম উগান্ডায় এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত মামদানি “নিউইয়র্কের সংস্কৃতি বোঝেন না।” তার দাবি, “রিপাবলিকানদের সামনে দুটোই পছন্দ — আমি অথবা মামদানি। ভোট নষ্ট করবেন না।”
নিউইয়র্কের সাবেক গভর্নর ডেভিড প্যাটারসন বলেছেন, মামদানির জনপ্রিয়তা থামাতে না পেরে কুয়োমো নেতিবাচক প্রচার বাড়িয়েছেন।
স্লিওয়ার মাঠপর্যায়ের প্রচার
৭১ বছর বয়সী কার্টিস স্লিওয়া সাবওয়ে এবং রাস্তা ধরে প্রচারণায় ব্যস্ত। তার প্রতিশ্রুতি — ট্রেন ও শহরে নিরাপত্তা জোরদার। ভারি বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যা নিয়ে ভিডিও বানিয়ে তিনি বলেন, শহরের বুনিয়াদি অবকাঠামো ভেঙে পড়েছে।
স্লিওয়া বলেন, শহরের গৃহহীন, মানসিকভাবে অসুস্থ ও অবহেলিত ভেটেরানদের সেবা প্রয়োজন। “আমাদের শক্ত নেতা নয়, দরকার সহানুভূতিশীল মানুষ,” বলেন তিনি। তার দাবি, কুয়োমো “ঠাণ্ডা হৃদয়ের” এবং ভোটাররা “রাগ”কে কখনোই ভোট দেয় না।
মামদানির জনমোহিনী প্রচারণা
অ্যাসেম্বলিমেম্বার জোহরান মামদানি জুনের প্রাইমারিতে জয়ের পর থেকে তরুণ ও প্রগতিশীল ভোটারদের মাঝে ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন। তিনি সপ্তাহব্যাপী অব্যাহত প্রচারণায় আছেন, যাতে সমর্থকেরা আত্মতুষ্টিতে না ভোগেন।
গত সপ্তাহে কুইন্সে বার্নি স্যান্ডার্স ও আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্তেজের সঙ্গে ১০ হাজারের বেশি মানুষের সমাবেশে তিনি বলেন, “আমি আত্মতুষ্ট হব না।” রাতবিরাতে হাসপাতাল ও বিমানবন্দরের নাইট শিফট কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেছেন, বোডেগা মালিকদের সমিতির সমর্থন পেয়েছেন, ডেইলি শো’তে অংশ নিয়েছেন এবং সোশ্যাল মিডিয়া তারকাদের সঙ্গে ব্রিফিং করেছেন।
তার প্রচারণার মধ্যেই একজন দ্বিধায় থাকা ভোটার সিদ্ধান্ত নেন। ম্যানহাটনের বাসস্টপে মামদানিকে দেখে অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক রিটা বেলেভিউ বলেন, তিনি কুয়োমো নাকি মামদানির পক্ষ নেবেন তা ভাবছিলেন। “ভাবছি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম,” বলেই তিনি বাসে উঠেন।
ভোটের প্রহর গোনা শুরু
রবিবার আগাম ভোট শেষ হয়েছে। শহরজুড়ে শেষ মুহূর্তের প্রচারে তিন প্রার্থীই নিজেদের সমর্থকদের সক্রিয় রাখতে সচেষ্ট। এখন দেখার বিষয় — ভোটাররা অভিজ্ঞ নেতৃত্ব, প্রগতিশীল পরিবর্তন নাকি মাঠপর্যায়ের আইন-শৃঙ্খলার প্রতিশ্রুতি বেছে নেন।
তথ্যসূত্র: এপি
