যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য বাণিজ্য চুক্তি: জি-৭ সম্মেলনে স্বাক্ষর, শুল্ক হ্রাসে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ

যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য বাণিজ্য চুক্তি: জি-৭ সম্মেলনে স্বাক্ষর, শুল্ক হ্রাসে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ
প্রকাশঃ জুন 17, 2025 12:57 অপরাহ্ন

জি-৭ সম্মেলনের মঞ্চে একটি বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের সময় হঠাৎ এক বিব্রতকর মুহূর্তের সৃষ্টি হলেও, তা আটকাতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য চুক্তির বাস্তবায়ন। সোমবার কানাডায় আয়োজিত সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার একটি যৌথ বাণিজ্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

চুক্তি স্বাক্ষরের সময় ট্রাম্প হঠাৎ করে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র মাটিতে পড়ে যায়। তবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমার ঠাণ্ডা মাথায় তা সামাল দেন এবং কাগজ কুড়িয়ে নিয়ে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। স্টারমার বলেন,

“এটি আমাদের উভয় দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। একটি শক্তিশালী অংশীদারিত্বের প্রতিফলন। ধন্যবাদ, ডোনাল্ড।”

চুক্তিটি অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্য থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর শুল্ক হ্রাস করবে। এতে গাড়ির ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক ধার্য করা হবে, যা অন্য দেশগুলোর ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ। এছাড়া যুক্তরাজ্যে তৈরি অ্যারোস্পেস (বিমান ও মহাকাশ প্রযুক্তি) পণ্যের ওপর সব ধরনের শুল্ক সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

বিনিময়ে যুক্তরাজ্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা গরুর মাংস ও ইথানল-এর ওপর শুল্ক কমাবে। তবে স্টিল বা লোহার ক্ষেত্রে কিছুটা জটিলতা থেকে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্যের জন্য নির্ধারিত পরিমাণে স্টিল শুল্কমুক্তভাবে আমদানির অনুমতি দেবে, তবে এই ‘কোটা’র সুনির্দিষ্ট পরিমাণ এখনো নির্ধারিত হয়নি। হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যকে তাদের উৎপাদন এবং সরবরাহ চেইনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, তারপরেই কোটা নির্ধারণ চূড়ান্ত হবে।

এই চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাজ্য প্রথম দেশ হিসেবে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বাণিজ্য চুক্তি করলো। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন,

“আমরা দীর্ঘদিনের মিত্র এবং এখন ভালো বন্ধু হয়ে উঠেছি। ও (স্টারমার) আমার চেয়ে কিছুটা বেশি উদারপন্থী হলেও, আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারছি।”

অন্যদিকে, একই দিন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হন। জি-৭ সম্মেলনের পাশে ৩০ মিনিটের একটি দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পর তারা শুধু ভবিষ্যতে আবার আলোচনা করার প্রতিশ্রুতি দেন।

এই চুক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে একটি বড় ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে এবং তা ভবিষ্যতের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের জন্য একটি নতুন দিক উন্মোচন করতে পারে।

তথ্যসূত্র: রয়টার্স

সম্পর্কিত-
0%
0%
0%
0%