ভারত চেনাব নদীর পানি প্রবাহ বন্ধ করলো, সিন্ধু চুক্তি কার্যত বাতিল

ছবি সংগ্রহকৃত
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রামবানে অবস্থিত বাগলিহার বাঁধ থেকে পাকিস্তানগামী চেনাব নদীর পানি প্রবাহ ৯০ শতাংশ পর্যন্ত আটকে দিয়েছে ভারত। পাকিস্তানের নতুন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এমন সিদ্ধান্ত নেয় ভারত সরকার। এর ফলে পাকিস্তানে প্রবাহিত গুরুত্বপূর্ণ নদীটির পানির স্তর মারাত্মকভাবে কমে গেছে বলে নিশ্চিত করেছে একাধিক ভারতীয় গণমাধ্যম, যার মধ্যে রয়েছে হিন্দুস্তান টাইমসও।
চেনাব নদীটির উৎপত্তি হিমাচল প্রদেশে, যা জম্মু-কাশ্মীর অতিক্রম করে প্রবাহিত হয় পাকিস্তানের পাঞ্জাব অঞ্চলে। এটি পাঞ্জাবের পাঁচটি প্রধান নদীর একটি এবং সিন্ধু অববাহিকার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এতদিন সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তির আওতায় ভারত এই নদীর প্রবাহে বড় কোনো হস্তক্ষেপ করেনি। তবে ১৯৬০ সালের ঐতিহাসিক সিন্ধু চুক্তি কার্যত বাতিলের পর, এবার চেনাব নদীতেও বাধা সৃষ্টি করলো ভারত।
সিন্ধু পানি চুক্তি অনুযায়ী, রবি, বিয়াস ও সুতলেজ নদীর ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে ভারতের। অন্যদিকে, সিন্ধু, ঝিলাম ও চেনাবের পানি ব্যবহারের অধিকার ছিল পাকিস্তানের হাতে। মূলত কৃষি জমিতে সেচের জন্য পাকিস্তান এই নদীগুলোর ওপর প্রায় ৮০ শতাংশ নির্ভরশীল।
বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ভারতের নিরাপত্তা উদ্বেগ বাড়িয়েছে এবং তারই প্রতিক্রিয়ায় এমন কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে নয়াদিল্লি। পাকিস্তানে ভারতীয় পর্যটকদের ওপর সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে ভারতীয় নাগরিকদের একাংশ এ সিদ্ধান্তকে “দাঁতভাঙা জবাব” বলে অভিহিত করেছেন।
এ পদক্ষেপের ফলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত যদি পুরোপুরি সিন্ধু চুক্তি থেকে সরে আসে, তবে দক্ষিণ এশিয়ায় জল সংকটকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের কূটনৈতিক ও পরিবেশগত সংকট দেখা দিতে পারে।
এই ঘটনার পর পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি পাওয়া যায়নি। তবে দেশটির কূটনৈতিক মহল ভারতের এমন পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে বিবেচনা করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সূত্র: এ এন আই