‘Jurassic World: Rebirth’ – পুরনো গল্পে নতুন প্রাণ, দর্শকদের ফিরিয়ে নিলো নস্টালজিয়ার জগতে

‘Jurassic World: Rebirth’ – পুরনো গল্পে নতুন প্রাণ, দর্শকদের ফিরিয়ে নিলো নস্টালজিয়ার জগতে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশঃ জুলাই 1, 2025 1:05 অপরাহ্ন

তিন দশক আগে স্টিভেন স্পিলবার্গ যে জুরাসিক জগতে দর্শকদের প্রথমবার প্রবেশ করিয়েছিলেন, সেই ক্লোন করা ডাইনোসর সাম্রাজ্য আবারও ফিরে এসেছে নতুন গল্প ও পরিচিত উত্তেজনায়। ‘Jurassic World: Rebirth’ নামের এই নতুন অধ্যায় পরিচালনা করেছেন গ্যারেথ এডওয়ার্ডস। স্কারলেট জোহানসন, মাহারশালা আলি ও জোনাথন বেইলির মতো তারকা মুখে ভরপুর সিনেমাটি মুক্তির প্রথম দিনেই ভক্তদের মধ্যে আলোড়ন তুলেছে।

🎟️ রিলিজ তারিখ: বুধবার, ২ জুলাই
⏱️ সময়কাল: ২ ঘণ্টা ১৪ মিনিট
🎥 রেটিং: PG-13
🧬 চিত্রনাট্য: ডেভিড কোয়েপ (মূল: মাইকেল ক্রাইটন)


ইঞ্জিনিয়ারড এন্টারটেইনমেন্ট, নাকি কর্পোরেট লোভ?

গল্পের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ইনজেন (InGen) নামের জেনেটিক কোম্পানির নতুন এক পরীক্ষা—পূর্ববর্তী ডাইনোসরের ক্লোন না করে এবার তারা তৈরি করেছে নতুন হাইব্রিড প্রজাতি। “Distortus Rex” নামের এক ভয়ঙ্কর প্রাণী তার মধ্যে অন্যতম, যার অবয়ব যেন বেলুগা তিমির সঙ্গে স্পাইনোসরাসের এক ভীতিকর সংমিশ্রণ।

ড. হেনরি লুমিস চরিত্রে জোনাথন বেইলি অসাধারণ অভিনয় করেছেন, যিনি প্রশ্ন তোলেন এই সব ‘বিনোদনের জন্য তৈরি’ প্রাণীগুলোর অস্তিত্বের নৈতিকতা নিয়ে।


অভিযান, দুর্ঘটনা ও দ্বীপের বিভীষিকা

রুপার্ট ফ্রেন্ড অভিনীত কর্পোরেট চরিত্র মার্টিন ক্রেবস পার্কারজেনিক্স (ParkerGenix) নামক কোম্পানির হয়ে একটি গোপন অভিযান পরিচালনা করেন বারবাডোজের কাছে সেন্ট-হুবার্ট দ্বীপে। মিশনের উদ্দেশ্য—টাইটানোসরাস, মোসাসরাস ও কোয়েটজালকোয়াটলাসের ডিএনএ সংগ্রহ করা।

তাঁর সঙ্গে অভিযানে যোগ দেন—

  • জোরা বেনেট (স্কারলেট জোহানসন): সাবেক মিলিটারি অপারেটিভ
  • ড. হেনরি লুমিস (জোনাথন বেইলি): জাদুঘরের বিজ্ঞানী
  • ক্যাপ্টেন ডানকান কিনকেইড (মাহারশালা আলি): যুদ্ধজাহাজ ‘এস্যেক্স’-এর চালক

অবৈধ অভিযান, দ্বীপে স্পাইনোসরাসের আক্রমণ ও এক রহস্যময় ইনজেন ফ্যাসিলিটিতে ঢোকার মধ্য দিয়ে সিনেমার মূল অ্যাডভেঞ্চার শুরু হয়।


ডেলগাডো পরিবারের আবেগঘন সংযোজন

পাশাপাশি একটি পারিবারিক কাহিনীও এগিয়ে চলে। রিউবেন ডেলগাডো তার দুই কন্যা তেরেসা ও ইসাবেলাকে নিয়ে ছুটি কাটাতে বের হন। কিন্তু এক মোসাসরাসের হামলায় তাদের নৌকা উল্টে যায়। তাদের উদ্ধার করতে এগিয়ে আসে অভিযানের প্রধান দল।

১১ বছর বয়সী ইসাবেলা তার ব্যাকপ্যাকে থাকা কিউট, পোষ্য-সদৃশ এক ছোটো ডাইনোসরকে (অ্যাকুইলোপ্স) ‘ডোলোরেস’ নাম দেয়—যা দর্শকদের চোখে পানি এনে দেয়।


স্পিলবার্গীয় মুহূর্তে ভরা: শ্বাসরুদ্ধকর রাফট চেজ থেকে ডাইনো ভ্যালির আবেগ

সিনেমার এক বিশেষ দৃশ্যে, যখন হেনরি একটি টাইটানোসরাসের পা ছুঁয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ে—সেই মুহূর্তে জন উইলিয়ামসের মূল থিম সুর ফিরে আসে নতুন রূপে, যা দর্শকদের ফিরিয়ে নেয় ১৯৯৩ সালের প্রথম জুরাসিক পার্কে।

এছাড়া ক্লাসিক রান্নাঘর সিকোয়েন্সের রিমেক, জলের উপর খোলা রাফটে টি-রেক্সের তাড়া, আর কোয়েটজালকোয়াটলাসের বাসা থেকে ডিম চুরি করে প্রাণে বেঁচে ফেরা—সবকিছু মিলিয়ে অ্যাডভেঞ্চারের পরিমাণ যথেষ্ট।


প্রযুক্তি, সিজিআই ও বাস্তব লোকেশনের অসাধারণ মিশেল

থাইল্যান্ডের জঙ্গল ও পরিত্যক্ত গবেষণাগারের সেট মিলিয়ে দৃশ্যত সিনেমাটি চমৎকার এক ভিজ্যুয়াল অভিজ্ঞতা। ডিজিটাল গ্রাফিক্সের সঙ্গে বাস্তব লোকেশনের ফিউশন এতটাই নিখুঁত যে, কোথায় বাস্তব আর কোথায় সিজিআই তা আলাদা করা মুশকিল।


শেষ কথা: পুরনো ধারায় ফিরে আসা, কিন্তু শক্তিশালীভাবে

যদিও Jurassic World: Rebirth নতুন কিছু দেখানোর চেয়ে পুরনো গল্পগুলোর আধুনিক রিমিক্সের দিকে ঝুঁকেছে, তবুও দর্শকপ্রিয় চরিত্র, দ্রুতগামী গল্পবিন্যাস ও আবেগময় মুহূর্তগুলো সিনেমাটিকে করে তুলেছে উপভোগ্য।


সংক্ষেপে রিভিউ:

  • 🎯 নস্টালজিয়া লভার্সদের জন্য মাষ্ট-ওয়াচ
  • 🦕 ডাইনোসরের সাসপেন্স-অ্যাকশনে ভরপুর
  • ❤️ মানবিক সম্পর্ক ও নৈতিক প্রশ্নে স্পর্শকাতর
  • 🌋 ভিজ্যুয়াল ও সাউন্ড ডিজাইন চমৎকার

🔚 সর্বশেষ কথায়:
যারা Jurassic Park সিরিজের ভক্ত, তারা নিঃসন্দেহে এই সিনেমা উপভোগ করবেন। পুরনো ঘরানায় নতুন প্রাণ ফেরানো, এই সিনেমার সবচেয়ে বড় সাফল্য।


সম্পর্কিত-
0%
0%
0%
0%