রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সহায়তা সংকট: ১,০০০’র বেশি শিক্ষকের চাকরিচ্যুতি UNICEF-এর, আরও ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা

১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে তোলা এই ছবিতে, শোনজিদা, একজন রোহিঙ্গা মহিলা উখিয়ার একটি শরণার্থী শিবিরের একটি স্কুলে শিক্ষকতা করছেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশঃ জুন 4, 2025 11:58 পূর্বাহ্ন

বিশ্বব্যাপী সহায়তা কমে যাওয়ায় বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে কর্মরত ১,০০০-এরও বেশি শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করেছে জাতিসংঘের শিশু সংস্থা UNICEF। আর্থিক সহায়তা না মিললে আরও অনেকের চাকরি হারানোর ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা — যারা অধিকাংশই নির্যাতিত মুসলিম জনগোষ্ঠী — বর্তমানে বাংলাদেশে বিভিন্ন ত্রাণশিবিরে বসবাস করছে। ২০১৭ সালে মিয়ানমারে সামরিক অভিযানের পর তারা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

এই শিক্ষক ছাঁটাইয়ের ঘটনা মূলত যুক্তরাষ্ট্রের তহবিল কাটছাঁটের পর ঘটেছে বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার রাতে এক বিবৃতিতে UNICEF জানায়, “বিশ্বজুড়ে সহায়তা তহবিলের সংকটের কারণে রোহিঙ্গা শিশুদের প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি।”

সংস্থাটি আরও জানায়, প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত মোট ১,১৭৯ জনের চুক্তি বাতিল করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকারের শীর্ষস্থানীয় একজন সহায়তা কর্মকর্তার বরাতে জানা গেছে, ছাঁটাইয়ের আগে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে প্রায় ৪,০০০ শিক্ষক কাজ করতেন।

বর্তমানে ঈদ উপলক্ষে স্কুলগুলো বন্ধ রয়েছে। তবে জুন মাসের শেষ দিকে স্কুল খুললে যদি নতুন করে অর্থ সহায়তা না আসে, তাহলে আরও অনেক শিক্ষক চাকরি হারাতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

UNICEF জানায়, “বাকি কর্মীদের ফেরত নেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে নতুন তহবিলের ওপর নির্ভর করছে। আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আশাবাদী, যেন প্রতিটি শিশু তার প্রাপ্য ভবিষ্যৎ ফিরে পায়।”

বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন মানবিক সহায়তা সংস্থা বড় ধরনের সংকটে পড়েছে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় ক্ষমতায় ফিরে অধিকাংশ বিদেশি সাহায্য বন্ধ করার পর। যুক্তরাষ্ট্র ঐতিহ্যগতভাবে এসব সংস্থার সবচেয়ে বড় দাতা ছিল।

UNICEF আরও জানায়, “রোহিঙ্গা শিশুদের জরুরি চাহিদা সম্পর্কে আমরা গভীরভাবে সচেতন। এদের অনেকেই ইতোমধ্যে শিক্ষাজীবনে, স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও সুরক্ষায় চরম বিপর্যয়ের শিকার হয়েছে।”

“আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে এই শিশুদের মৌলিক দক্ষতা প্রদান, যাতে তারা আত্মবিশ্বাস নিয়ে নিজেদের সমাজে অবদান রাখতে পারে — যখন নিরাপদে ফিরে যাওয়ার সময় আসবে।”

সম্পর্কিত-
0%
0%
0%
0%