শেখ জুয়েলের ভারতীয় আধার কার্ড দাবিতে ভুয়া ছবি ভাইরাল

শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েলের নামে ভুয়া আধার কার্ড প্রচারের মিথ্যা তথ্য
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশঃ মার্চ 16, 2025 9:20 পূর্বাহ্ন

শেখ জুয়েলের ভারতীয় আধার কার্ড দাবিতে ভুয়া ছবি ভাইরাল। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই ও সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল ভারতের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। বলা হচ্ছে, তিনি ‘বিধান মল্লিক’ নাম ব্যবহার করে ভারতের আধার কার্ড তৈরি করেছেন এবং পিতার নাম দিয়েছেন ‘মুদিন্দ্রনাথ মল্লিক’। বিভিন্ন গণমাধ্যমের বরাতে এই তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে, এই দাবি ভিত্তিহীন এবং প্রচারিত আধার কার্ডটি সম্পূর্ণ ভুয়া।

কথিত আধার কার্ডের বিশ্লেষণ

শেখ জুয়েলের ভারতীয় আধার কার্ড দাবিতে ভুয়া ছবি ভাইরাল। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই ও সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল ভারতের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। বলা হচ্ছে, তিনি ‘বিধান মল্লিক’ নাম ব্যবহার করে ভারতের আধার কার্ড তৈরি করেছেন এবং পিতার নাম দিয়েছেন ‘মুদিন্দ্রনাথ মল্লিক’। বিভিন্ন গণমাধ্যমের বরাতে এই তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে, এই দাবি ভিত্তিহীন এবং প্রচারিত আধার কার্ডটি সম্পূর্ণ ভুয়া।

রিউমর স্ক্যানার কথিত আধার কার্ডটি বিশ্লেষণ করে দেখতে পায়, কার্ডটির বাম পাশে শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েলের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। কার্ডে নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিধান মল্লিক’ এবং পিতার নাম উল্লেখ রয়েছে ‘মুদিন্দ্রনাথ মল্লিক’। জন্ম তারিখ লেখা রয়েছে ১ জানুয়ারি ১৯৫৯। আধার নম্বর দেওয়া হয়েছে ৮৪৪২০৫৬৭৫৭২৬। এছাড়া কার্ডের ডান পাশে একটি QR কোডও রয়েছে।

এই নম্বরটি ভারতীয় সরকারি অ্যাপ এবং একাধিক ফ্যাক্ট-চেকারের সহায়তায় যাচাই করে দেখা হয়। ফলাফল হিসেবে জানা যায়, এই নম্বরের সঙ্গে ভারতীয় আধার ডাটাবেজে কোনো তথ্য মেলে না। অর্থাৎ, এটি একটি জাল আধার কার্ড।

আধার কার্ডের বৈশিষ্ট্য ও জালিয়াতির প্রমাণ

শেখ জুয়েলের ভারতীয় আধার কার্ড দাবিতে ভুয়া ছবি ভাইরাল। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই ও সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল ভারতের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। বলা হচ্ছে, তিনি ‘বিধান মল্লিক’ নাম ব্যবহার করে ভারতের আধার কার্ড তৈরি করেছেন এবং পিতার নাম দিয়েছেন ‘মুদিন্দ্রনাথ মল্লিক’। বিভিন্ন গণমাধ্যমের বরাতে এই তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে, এই দাবি ভিত্তিহীন এবং প্রচারিত আধার কার্ডটি সম্পূর্ণ ভুয়া।

ভারতের আধার কার্ড হলো একটি নির্দিষ্ট পরিচয়পত্র, যা ব্যাংক হিসাব খোলা, মোবাইল সিম সংগ্রহ এবং অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত হয়। এ ধরনের কার্ড পেতে হলে বৈধ পরিচয়পত্র ও ঠিকানার প্রমাণপত্র জমা দিতে হয়। অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভারতীয় নাগরিকদের প্রকৃত আধার কার্ডে পিতার নাম কার্ডের সামনের অংশে উল্লেখ করা হয় না। বরং পেছনের অংশে ঠিকানার অংশে বাবার নাম থাকতে পারে। উপরন্তু, আধার কার্ড নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়, এটি শুধুমাত্র পরিচয়পত্র।

ভারতীয় ফ্যাক্টচেকারদের কাছ থেকে জানা যায়, কার্ডের ফর্ম্যাট সব রাজ্যে এক হলেও ভাষাগত এবং কিছু ডিজাইনে অল্প পরিবর্তন থাকতে পারে। তবে কোথাও বাবার নাম সামনে দেওয়া থাকে না। এ ছাড়া, মূল আধার কার্ড তৈরি হলে সেটি প্রথমে সাধারণ কাগজে প্রিন্ট আউট করা হয় এবং ভালো মানের Polyvinyl Chloride (PVC) কার্ড চাইলে বাড়তি অর্থ দিয়ে পেতে হয়।

ভুয়া কার্ডের সম্ভাব্য উদ্দেশ্য

ভারতে জাল আধার কার্ড বানানোর ঘটনা নতুন নয়। অনেক সময় হোটেল, বাসা ভাড়া নেওয়া বা অন্যান্য স্বল্পমাত্রার কাজে এগুলো ব্যবহৃত হয়। তবে মোবাইল সিম নেওয়া বা সরকারি কাজে এগুলো কার্যকর নয়, কারণ সেসব ক্ষেত্রে ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং মোবাইল নম্বরে ওটিপি যাচাই করা হয়। বড় জালিয়াত চক্র ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ডাটাবেজে তথ্য জালিয়াতি করার চেষ্টা করলেও, কথিত ‘বিধান মল্লিক’ নামের কার্ডের ডাটাবেজে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ফলে এটি যে ভুয়া, তা নিশ্চিত।

শেখ জুয়েলের ভারতীয় আধার কার্ড দাবিতে ভুয়া ছবি ভাইরাল। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই ও সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল ভারতের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। বলা হচ্ছে, তিনি ‘বিধান মল্লিক’ নাম ব্যবহার করে ভারতের আধার কার্ড তৈরি করেছেন এবং পিতার নাম দিয়েছেন ‘মুদিন্দ্রনাথ মল্লিক’। বিভিন্ন গণমাধ্যমের বরাতে এই তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে, এই দাবি ভিত্তিহীন এবং প্রচারিত আধার কার্ডটি সম্পূর্ণ ভুয়া।

বাংলাদেশের এনআইডি কার্ড যাচাই

এছাড়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েলের বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্রের একটি ছবি ছড়ানো হয়েছে, যেখানে তার নাম ‘সেখ সালাহউদ্দিন’, পিতার নাম ‘সেখ আবু নাছের’, মাতার নাম ‘রাজিয়া খাতুন’ এবং জন্মতারিখ ১ জানুয়ারি ১৯৬৭। পরিচয়পত্র নম্বর ১৯৬৭২৬৯২৬১৯০০০০৩৩।

প্রাথমিকভাবে সন্দেহ হয় পরিচয়পত্রের স্বাক্ষরে লেখা ‘Naser’ শব্দটি দেখে, যা পিতার নাম। সাধারণত, এনআইডিতে ব্যক্তির নিজের স্বাক্ষর থাকার কথা। এ ছাড়াও পরিচয়পত্রে ইংরেজিতে বানান ভুল আছে— ‘Government’ বানান ‘Governmment’ এবং ‘People’s’ বানান ‘Peple’s’ লেখা হয়েছে।

রিউমর স্ক্যানার নির্বাচন কমিশন এবং জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট থেকে উক্ত এনআইডি নম্বর যাচাই করে দেখে, এটি শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েলেরই। পিতামাতা এবং জন্মতারিখের তথ্যও মিলেছে। তবে এনআইডিতে বানান ভুল এবং স্বাক্ষরের অসঙ্গতি থেকে ধারণা করা হচ্ছে, এটি তার প্রকৃত এনআইডির তথ্য নিয়ে তৈরি করা একটি ভুয়া এনআইডি কার্ডের ছবি।

সব তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে স্পষ্টভাবে বলা যায়, শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েলের নামে ছড়ানো ভারতীয় আধার কার্ডটি ভুয়া এবং সম্পূর্ণ বানোয়াট। তার বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্রের প্রচারিত ছবিটিও সন্দেহজনকভাবে বানানো। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে এই ভুয়া তথ্য প্রচার করা হয়েছে।

সুত্র: রিউমর স্ক্যানার

সম্পর্কিত-
0%
0%
0%
0%