ধর্মচর্চা বাড়লে সমাজে অপরাধ কমবে: ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. এএফএম খালিদ হোসেন

ধর্মীয় অনুশীলন সমাজে অপরাধ প্রবণতা হ্রাস করতে সহায়ক— এমন মন্তব্য করেছেন ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. এএফএম খালিদ হোসেন। আজ তিনি চট্টগ্রামের হাটহাজারী, রাউজান ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় প্রায় ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য তিনটি মডেল মসজিদের একটি’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও অপর দুইটির নির্মাণকাজের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “যদি সমাজের প্রতিটি মানুষ ধর্মচর্চায় মনোযোগী হয়, তাহলে সমাজে অপরাধ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে। আমরা যে মসজিদ নির্মাণ করেছি, তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব এখন স্থানীয় জনগণের।”
উল্লেখ্য, হাটহাজারীতে নির্মিত এই মডেল মসজিদে সরকারের ব্যয় হয়েছে ১৩ কোটি টাকা। এই মসজিদ যেন পূর্ণাঙ্গভাবে কার্যকর থাকে, প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় হয়— সেই আহ্বান জানান তিনি।
ড. খালিদ হোসেন আরও বলেন, “মসজিদকেন্দ্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমাজের সবাইকে নিয়মিত মসজিদে আসা নিশ্চিত করতে হবে। নামাজ মানুষকে সব রকমের খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে, নৈতিকতাবোধ জাগ্রত করে এবং মানবিক মূল্যবোধ রক্ষা করে।”
তিনি আরও জানান, “এই বছর হজ পালনে কেউ বিমানবন্দরে হয়রানির শিকার হননি, সৌদি আরবে যাওয়ার সময়ও কেউ কোনো হয়রানির মুখে পড়েননি। কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি এমন অভিযোগও আসেনি। এছাড়া এবার হাজিদের জন্য কাবার খুব কাছেই বাসা ভাড়া করা হয়েছে, ফলে খরচও কম হয়েছে।”
পরে উপদেষ্টা হাটহাজারী মডেল মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন। প্রথম দিন আজ হাটহাজারী বড় মাদ্রাসার প্রধান মুফতি মো. জাসিম উদ্দিন খুতবা প্রদান ও জুমার নামাজে ইমামতি করেন।
বড়সংখ্যক মুসল্লি এদিন মসজিদে উপস্থিত হয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণ এবং এই মসজিদ নির্মাণের জন্য বর্তমান সরকারের প্রতি দোয়া করেন।
অনুষ্ঠানে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আউয়াল হাওলাদার, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক এ. সালাম খান, প্রকল্প পরিচালক মো. শহিদুল আলমসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখেন।
তিনতলা বিশিষ্ট এই মসজিদ কমপ্লেক্সে একসঙ্গে ১,২০০ জন মুসল্লির নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে— মৃতদেহ গোসলের স্থান, গাড়ি পার্কিং, ইমাম-মুয়াজ্জিন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, এতিমখানা, ইসলামিক বই প্রদর্শনী ও বিক্রয়কেন্দ্র, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অফিস, রান্নাঘর ও ডাইনিং, ইসলামিক গবেষণা কেন্দ্র, গণশিক্ষা কার্যক্রম, হজ বুকিং ব্যবস্থা, ইসলামিক গ্রন্থাগার, ইমাম ও মুয়াজ্জিনের থাকার কক্ষ, অতিথি কক্ষ, কনফারেন্স রুম, অটিজম কর্নারসহ নানাবিধ আধুনিক সুবিধা।
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ইসলামিক ফাউন্ডেশন (আইএফ) এর তত্ত্বাবধানে ‘মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প’র আওতায় সারাদেশে মোট ৫৬৪টি মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে।
তথ্যসূত্র: BSS