গাজায় ইসরায়েলি হামলায় শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত, ধ্বংসস্তূপে রূপ নিয়েছে বসতিগুলো

অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছে একটি মাত্র ছোট্ট মেয়ে
গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর সাম্প্রতিক বিমান হামলায় একদিনে প্রাণ হারিয়েছেন 100র বেশি ফিলিস্তিনি নাগরিক। আহত হয়েছেন আরো অনেকেই। গণবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকাগুলোকে টার্গেট করে চালানো এই হামলা ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে ঘরবাড়ি। ছিন্নভিন্ন করেছে পরিবার।
কেন্দ্রীয় গাজার, আলা হাসপাতাল এখন যেন মৃত্যুপরী। ইসরাইলি হামলায় আহতদের বাঁচাতে মরিয়াহ হয়ে উঠেছে স্বজন ও স্থানীয়রা। কিন্তু অনেককে হাসপাতালে আনা হয়েছে আর জীবিত ফেরানোর জন্য নয় বরং তাদের জানাজার প্রস্তুতি নিতে। নিহতদের মধ্যে রয়েছে অন্তত তিনজন শিশু।
যাদের নিথর দেহ সাদাকাফনে মুড়ে প্রস্তুত করা হয় দাফনের জন্য। শোগ্রস্ত পরিবারগুলোর আর্তনাতে পেয়ে বাড়ি হয়ে উঠেছে হাসপাতালের পরিবেশ। আল মাসি ক্যাম্পে চালানো এক হামলায় একঝাক তাবু এখন মাটির সঙ্গে মিশে গেছে যা একসময় মানুষের ঘর ছিল।
ওই হামলা থেকে অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছে একটি মাত্র ছোট্ট মেয়ে। কিন্তু তার পরিবারের কেউ বাঁচেনি। তার মা-বাবা ভাইবোন কেউই আর এখন জীবিত নেই। শিশুটির দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন তার দাদা তিনিও এখন নিহত হয়েছেন। আর তার ভবিষ্যতে কি হবে এই প্রশ্নও উদ্বিগ্ন করেছে সবাইকে।
এমন হৃদয়বিদারক অবস্থার মধ্যে ইসরাইল আবারো হামলাচালিয়েছে একটি গণবোষিতপূর্ণ অস্থায়ী ক্যাম্পে। এখন গাজা শহরে শোনা যাচ্ছে রক্তাক্ত আহতদের কান্না। আতঙ্কিত মানুষের আত্মচিৎকার। এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন গাজা ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালের পরিচালক ডক্টর মারওয়ানা সুলতান তার স্ত্রী ও সন্তানরাও।
চিকিৎসকদের এমন মৃত্যু গাজার চিকিৎসা সেবাকে আরো দুর্বল করে তুলেছে। গাজার এই বাস্তবতা এখন প্রতিদিনের। মৃত্যু এখন মৃত্যুসঙ্গী। কোন পরিবার কোন শিশু রেহাই পাচ্ছে না ইসরাইলি গোলাবর্ষণ থেকে। যুদ্ধ এখন আর কেবল হামাসের বিরুদ্ধে নয় বরং গোটা ফিলিস্তিনি বেসামারিক জনগণের বিরুদ্ধেই এক অব্যাহত আগ্রাসনের রূপনিয়েছে। স্থানীয় গাজাবাসীর এখন একটাই চাওয়া।
আল্লাহ যেন ইসরাইলিদের এই বর্বরতার জন্য তাদের বিচার করেন। তারা এখনো ধ্বংসস্তূপের মাঝে নিজেদের জীবনের অবশিষ্টাংশ খুঁজে ফিরছেন।