কানাডা, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া ও পর্তুগাল ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিল
কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন এটি ন্যায্য অধিকার রক্ষা করছে না

একই দিনে চারটি পশ্চিমা দেশ—কানাডা, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া ও পর্তুগাল—ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এর ফলে এখন পর্যন্ত বিশ্বের প্রায় ১৫০টিরও বেশি দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বহুল প্রচারিত স্বীকৃতি আসলে ফিলিস্তিনিদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করছে না, বরং ইসরাইলের দখলদারিত্বকেই আন্তর্জাতিকভাবে বৈধ করে তুলছে। পশ্চিমা দেশগুলোর স্বীকৃতি মূলত ১৯৬৭ সালের সীমারেখার মধ্যে সীমাবদ্ধ। অর্থাৎ পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকা, যা মূল ফিলিস্তিন ভূখন্ডের মাত্র ২২ শতাংশ। এর ফলে ১৯৪৮ সালের দখল, গণহত্যা ও শরণার্থী স্রোতকে কার্যত স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা উল্লেখ করছেন, ১৯৪৭ সালে জাতিসংঘের বিভাজন পরিকল্পনায় ইউরোপীয় ইহুদিদের দেওয়া হয়েছিল ৫৬ শতাংশ জমি, অথচ তারা ছিল মোট জনসংখ্যার মাত্র ৩৩ শতাংশ। সংখ্যাগরিষ্ঠ আরবরা, যারা শত শত বছর ধরে ওই অঞ্চলের অধিবাসী, তারা পেয়েছিল মাত্র ৪৩ শতাংশ জমি। ১৯৪৮ সালে ইহুদি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হামলা ও উচ্ছেদের মাধ্যমে গড়ে ওঠে ইসরাইল, দখল করে নেয় ৭৮ শতাংশ জমি। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে তারা দখল করে অবশিষ্ট ২২ শতাংশ—পশ্চিম তীর, গাজা ও পূর্ব জেরুজালেম।
পশ্চিমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইসরাইলকে নিরাপদ রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। তারা দাবি করছে, দুই রাষ্ট্র সমাধানের মাধ্যমে শান্তি আসবে। তবে শর্ত হিসেবে ফিলিস্তিনের রাজনীতি থেকে হামাসকে সরিয়ে ফাতাহ ও মাহমুদ আব্বাসকে ক্ষমতায় বসাতে হবে, যাদের প্রতি জনগণের আস্থা সীমিত।
বিশ্লেষকদের মতে, স্বাধীনতার নামে এই স্বীকৃতি আসলে নতুন এক প্রতারণা। কারণ ১৯৬৭ সালের সীমারেখা মানার অর্থ হলো ১৯৪৮ সালের নাকবা বৈধ করা, লাখো শরণার্থীর ফিরে আসার অধিকার অস্বীকার করা এবং মূল ফিলিস্তিন ভূখন্ডের ৭৮ শতাংশ ইসরাইলের দখলে রাখা। পশ্চিমা দেশগুলোর এই স্বীকৃতি নাটক ফিলিস্তিন সংকটের সমাধান নয়, বরং ইসরাইলি দখলদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করছে। ফলে প্রকৃত মুক্তি বা ন্যায়বিচার নয়—ফিলিস্তিনিদের জন্য এটি কেবল আরেকটি প্রতারণা।