সিন্ধু নদ ইস্যুতে পাকিস্তানের কঠোর হুঁশিয়ারি: পানি বন্ধ করলে সামরিক হামলার হুমকি

সিন্ধু নদ এই ছবিটি ai দিয়ে তৈরী
দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক রাজনীতি আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সাম্প্রতিক উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে। দুই চিরবৈরী পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে যুদ্ধাবস্থা ঘনিয়ে আসার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এই প্রেক্ষাপটে ভারতীয় পক্ষ থেকে সিন্ধু নদের পানি প্রবাহ বন্ধের হুমকি নিয়ে আলোচনা ব্যাপকভাবে জোরালো হয়েছে।
এ ইস্যুতে এবার কড়া বার্তা দিল পাকিস্তান। দেশটির সেনাপ্রধান সম্প্রতি এক সামরিক মহড়ায় ট্যাংকের ওপর দাঁড়িয়ে বলেন, যেকোনো ধরনের সামরিক দুঃসাহসের জবাব কঠোরভাবে দেওয়া হবে। এরপর আরও একটি কঠোর হুঁশিয়ারি আসে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফের কাছ থেকে।
তিনি পাকিস্তানের জিও নিউজে সম্প্রচারিত “নয়া পাকিস্তান” অনুষ্ঠানে বলেন, “ভারত যদি সিন্ধু নদের পানি আটকে দিতে কোনো বাধ নির্মাণ করে, তাহলে পাকিস্তান সরাসরি সামরিক হামলা চালাবে এবং সেই স্থাপনা ধ্বংস করে দেবে।” তিনি আরও বলেন, “এটা শুধু বন্দুক বা কামানের গোলা নয়, পানি আটকে রাখাও এক প্রকার মানবিক আগ্রাসন। যার ফলে লাখ লাখ মানুষ তৃষ্ণা ও ক্ষুধায় মারা যেতে পারে।”
খাজা আসিফ জানান, পাকিস্তান ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে বিষয়টি তুলে ধরছে এবং পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীরও কড়া সমালোচনা করেন। আসিফের অভিযোগ, আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতেই মোদি সরকার এমন আগ্রাসী মনোভাব নিচ্ছে।
উল্লেখ্য, ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানি চুক্তি অনুযায়ী ভারত ও পাকিস্তান সিন্ধু নদ এবং এর শাখা নদীগুলোর পানি ভাগাভাগি করে নেবে বলে একমত হয়। তবে এই চুক্তিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো—ভারতের কোনো স্থাপনার কারণে পাকিস্তানের পানি প্রবাহ ব্যাহত করা যাবে না।
গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগামে সংঘটিত একটি ভয়াবহ হামলাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে উঠেছে। ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় ফের যুদ্ধের আশঙ্কা প্রবল হয়ে উঠেছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সংকটময় পরিস্থিতিতে কূটনৈতিক সংলাপ এবং আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতার গুরুত্ব এখন যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। কারণ একটি ভুল সিদ্ধান্ত গোটা উপমহাদেশকে সংঘর্ষের আগুনে ঠেলে দিতে পারে।
আরও খবরের জন্য আমাদের সঙ্গে থাকুন।