আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে যমুনার সামনে বিক্ষোভ

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে যমুনার সামনে বিক্ষোভ
নিজস্ব প্রতিবেদক
সংশোধনঃ মে 9, 2025 6:10 অপরাহ্ন


আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দিয়ে নিষিদ্ধ করার দাবিতে রাজধানীর যমুনা ভবনের সামনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে চলছে টানা বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি। বৃহস্পতিবার রাত থেকে বিক্ষুব্ধ ছাত্রজনতা ও সাধারণ মানুষ এই কর্মসূচি শুরু করে। আন্দোলনের নেতৃত্বে রয়েছেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরাও বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।

বিক্ষোভকারীরা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, যতক্ষণ না আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার ঘোষণাসহ সরকারের পরিকল্পনা জনসমক্ষে তুলে ধরা হবে, ততক্ষণ তারা সেখান থেকে সরবেন না। বারবার তারা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন—”মুজিব মুজিব মুর্দাবাদ”, “সন্ত্রাসীদের বিচার চাই”, “আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করো”—এমন সব স্লোগানে মুখর হয়ে উঠেছে যমুনা ভবনের সামনের এলাকা।

আন্দোলনকারীদের মূল দাবি, দেশের সন্ত্রাসবিরোধী আইন অনুযায়ী আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দিয়ে অবিলম্বে নিষিদ্ধ করতে হবে। দলটির অতীত সহিংস কর্মকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং দলগতভাবে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। তারা চান, আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে হবে।

ভোর রাতে হাসনাত আব্দুল্লাহ এক বিবৃতিতে জানান, যমুনা ভবনের পাশের ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে একটি মঞ্চ নির্মাণের কাজ চলছে। সেখানে জুমার নামাজের পর বড় ধরনের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে পরবর্তী কর্মসূচির ঘোষণা আসতে পারে।

আন্দোলনের সাথে যুক্ত একাধিক সংগঠনের নেতাকর্মীরাও সেখানে উপস্থিত রয়েছেন এবং তাদের পক্ষ থেকেও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে সংহতি জানানো হয়েছে। তারা বলেন, গত জুলাই মাসে সংঘটিত সহিংসতা ও নৈরাজ্যের জন্য আওয়ামী লীগ সরাসরি দায়ী এবং এসব কর্মকাণ্ডের জন্য দলটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করাই যুক্তিযুক্ত।

এই প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টে জানান, আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন—যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ—নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত মোটামুটি চূড়ান্ত, শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিক ঘোষণা বাকি।

বিক্ষোভকারীরা আরও বলেন, যেসব আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে কিন্তু এখনো গ্রেফতার হননি, তাদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। অনেকে ইতোমধ্যেই দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়ে গেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। তারা দাবি জানিয়েছেন, এ ধরনের পালিয়ে যাওয়া রোধ করতে কড়া নজরদারি ও ব্যবস্থা নেওয়া হোক, যাতে কেউ দেশত্যাগ করতে না পারে।

সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের আকস্মিক দেশত্যাগের পর থেকেই আন্দোলন নতুন গতি পায়। আন্দোলনকারীরা বলছেন, এটি কোনো স্বাভাবিক ঘটনা নয়—এর পেছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র থাকতে পারে এবং এই ঘটনার পরই তারা বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেন।

এই মুহূর্তে যমুনা ভবনের সামনের এলাকাটি বিক্ষোভে উত্তপ্ত। আন্দোলনকারীরা সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণার আগ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নতুন করে কী ঘোষণা আসে, তা নিয়ে সবার দৃষ্টি এখন প্রধান উপদেষ্টার দিকে।

0%
0%
0%
0%