নিক্সন চৌধুরী ও তার স্ত্রী তারিন হোসেনের সম্পত্তি জব্দের নির্দেশ

ছবি সংগ্রহকৃত
সাবেক সংসদ সদস্য ও শেখ হাসিনার ভাগ্নে মুজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরী এবং তার স্ত্রী তারিন হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে একাধিক আইনি পদক্ষেপ নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সম্প্রতি দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তারিন হোসেনের নামে গুলশানে থাকা একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট এবং গ্যারেজের জায়গা জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন।
দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, গুলশানের একটি ১৩ তলা আবাসিক ভবনের ৭ম তলায় অবস্থিত ওই ফ্ল্যাটটি কমন স্পেস ও গ্যারেজসহ মোট ৫,০০০ বর্গফুট আয়তনের। ফ্ল্যাটটির আনুমানিক মূল্য ১০ কোটি ৩২ লাখ টাকা। অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, এই ফ্ল্যাটটি আগে নিক্সনের প্রথম স্ত্রী মুনতারিন চৌধুরীর নামে ছিল। মুনতারিন ছিলেন কানাডা প্রবাসী, যাকে নিক্সন ১৯৯৯ সালে বিয়ে করেন। ২০১৪ সালের ২৯ এপ্রিল তিনি ছাদ থেকে পড়ে মারা যান। সে সময় তার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হত্যার অভিযোগ ওঠে, তবে তা প্রমাণিত হয়নি।
২০১৬ সালে নিক্সন বিয়ে করেন দৈনিক ইত্তেফাকের প্রকাশক এবং সাবেক মন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর কন্যা তারিন হোসেনকে। বিয়ের পর ফ্ল্যাটটি তারিনের নামে হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে তারিন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক উপকমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন।
দুদকের সন্দেহ, ফ্ল্যাটটি অবৈধ উপার্জনে কেনা হয়েছে এবং অনুসন্ধান শুরুর পর তারিন তা হস্তান্তরের চেষ্টা করেন। এই প্রেক্ষাপটে আদালতে আবেদন করে দুদক এবং আদালত তা জব্দের নির্দেশ দেন। এই বিষয়ে তারিন হোসেন কিংবা নিক্সন চৌধুরীর পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এর আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকার একটি আদালত নিক্সন ও তারিনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে চলে গেলে নিক্সনও আত্মগোপনে চলে যান বলে জানা গেছে। একইভাবে গা ঢাকা দিয়েছেন তার স্ত্রী তারিন হোসেনও।
নিক্সন চৌধুরী একাধিকবার বিতর্কে জড়িয়েছেন, বিশেষ করে তার উদ্ধত আচরণের জন্য তিনি বরাবরই সমালোচিত হয়েছেন। যদিও তিনি যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন, আওয়ামী লীগের মূল সংগঠনে তার কোনো পদ ছিল না। তবে শেখ হাসিনার ভাগ্নে হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় প্রভাব খাটানোর অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
দুদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অনুসন্ধান এখনো চলমান এবং নিক্সন-তারিন দম্পতির সম্পদের প্রকৃত উৎস ও অন্যান্য অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানও চলবে।