দীর্ঘ প্রায় ১০ মাস আত্মগোপনে থাকার পর হঠাৎ করেই ভিডিও বার্তায় প্রকাশ্যে এলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের

দীর্ঘ প্রায় ১০ মাস আত্মগোপনে থাকার পর হঠাৎ করেই ভিডিও বার্তায় প্রকাশ্যে এলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। মধ্যরাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও বার্তায় তিনি ফের পুরনো আক্রমণাত্মক সুরে বক্তব্য দেন, যেখানে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতা, নির্বাচন এবং সরকার নিয়ে স্পষ্ট বার্তা দেন তিনি।
দীর্ঘদিন জনসম্মুখে অনুপস্থিত থাকায় রাজনৈতিক অঙ্গনে তার ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা গুঞ্জন ছিল। কেউ বলছিলেন তিনি দেশ ত্যাগ করেছেন, কেউ বলেছিলেন রাজনীতি ছেড়েছেন।
ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এই ভিডিওটি শেয়ার করেন। তিনি লেখেন, “দীর্ঘ ১০ মাস পর প্রকাশ্যে এলেন দলের সাধারণ সম্পাদক।” ভিডিওতে দেখা যায়, ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশে কোনো বিশ্বাসযোগ্য, গ্রহণযোগ্য বা নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না।”
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে কাদের বলেন, “তারা আদৌ নির্বাচন দেবে কিনা, সে বিষয়ে আমি সন্দিহান।” তিনি আরও বলেন, “নির্বাচনের নামে আজকে একটি অশুভ এলায়েন্স গড়ে তোলা হয়েছে, যারা সংস্কারের নামে জাতিকে বিভ্রান্ত করছে। আমরা এই ক্যাঙ্গারু কোর্ট গুড়িয়ে দেব। এর বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিরোধ চলবে।”
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটে। এরপর থেকেই অনেক কেন্দ্রীয় নেতা আত্মগোপনে চলে যান, যাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ওবায়দুল কাদের। তার দীর্ঘ অনুপস্থিতি নিয়ে নানা আলোচনা থাকলেও, এই ভিডিও প্রকাশের মাধ্যমে তার সক্রিয় রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তনের ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ভিডিও বার্তা শুধু আওয়ামী লীগের জন্য নয়, দেশের রাজনীতিতে একটি নতুন মেরুকরণের সম্ভাবনাও তৈরি করছে। বিশেষ করে নির্বাচনের প্রাক্কালে এমন বক্তব্য রাজনৈতিক উত্তাপ আরও বাড়াবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
ওবায়দুল কাদেরের এই বার্তা সরকারের প্রতি এক ধরনের চ্যালেঞ্জও বটে। এখন দেখার বিষয়, সরকার পক্ষ থেকে এর কী প্রতিক্রিয়া আসে এবং আওয়ামী লীগ কীভাবে নিজেদের রাজনৈতিক পুনর্গঠনে এগিয়ে যায়।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই ঘটনা নিঃসন্দেহে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করেছে। দীর্ঘদিন পর মুখ খোলা একজন শীর্ষ নেতার এমন বক্তব্য শুধু রাজনৈতিক আলোচনা নয়, ভবিষ্যতের ক্ষমতার সমীকরণকেও প্রভাবিত করতে পারে।