আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে: প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস

ছবিঃ ড.ইউনুস
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধের যেকোনো একদিন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। আজ সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এ ঘোষণা দেন।
ভাষণে তিনি বলেন,
“বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনসংক্রান্ত চলমান কার্যক্রম পর্যালোচনা করে আমি দেশবাসীর সামনে ঘোষণা করছি যে, আগামী জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধের যেকোনো একদিন অনুষ্ঠিত হবে। এই ঘোষণার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন উপযুক্ত সময়ে নির্বাচনের বিস্তারিত রোডম্যাপ প্রদান করবে।”
তিনি আরও জানান, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার তিনটি মূল ম্যান্ডেট— বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন—এর ভিত্তিতে দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। সে লক্ষ্যেই কাজ চলছে। আগামী রোজার ঈদের মধ্যেই বিচার ও সংস্কার কার্যক্রম একটি গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে পৌঁছাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বিশেষ করে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি সম্মিলিত দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিয়ে দৃশ্যমান অগ্রগতি আমরা দেখতে পারবো।”
🔍 ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনকে দায়ী করলেন জাতীয় সংকটের জন্য
স্বাধীনতার পর থেকে দেশের গভীর রাজনৈতিক সংকটগুলোর জন্য ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনপ্রক্রিয়াকে দায়ী করেন অধ্যাপক ইউনূস। তিনি বলেন,
“ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে বারবার একটি রাজনৈতিক দল ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছে এবং একপর্যায়ে বর্বর ফ্যাসিবাদে রূপ নিয়েছে। যারা এমন নির্বাচন আয়োজন করে, তারা জাতির কাছে অপরাধী। আর যে দল এতে ক্ষমতায় আসে, তারা জনগণের ঘৃণার পাত্রে পরিণত হয়।”
🗳️ নির্বাচনের পরিবেশ হবে উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব একটি পরিচ্ছন্ন, উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন করা, যাতে সর্বস্তরের জনগণ অংশগ্রহণ করতে পারে। তিনি বলেন,
“আমরা এমন একটি নির্বাচন আয়োজন করতে চাই, যা নতুন করে দেশকে কোনো সংকটে ফেলবে না।”
এর জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “যেসব প্রতিষ্ঠান সরাসরি নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত, সেখানে যদি সুশাসন নিশ্চিত করা না যায়, তাহলে ছাত্র-জনতার সব আত্মত্যাগ ব্যর্থ হয়ে যাবে।”
📌 সারসংক্ষেপ:
- নির্বাচন হবে ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে
- রোডম্যাপ দেবে নির্বাচন কমিশন
- বিচার ও সংস্কারে ঈদের আগেই অগ্রগতি হবে
- মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার চলমান
- ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনকে দায়ী করলেন অতীত সংকটের জন্য
- প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারে জোর দিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার
এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে আগামী নির্বাচনের একটি স্পষ্ট সময়সীমা নির্ধারিত হলো, যা রাজনৈতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।