সংবিধান সংস্কার নিয়ে ঐক্যমত কমিশনের বৈঠক: ৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলে একমত, জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে মতবিরোধ

ছবিঃ সংগ্রহকৃত
সংবিধান সংস্কার নিয়ে জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিয়েছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামি, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ মোট ৩০টি রাজনৈতিক দল। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, সংসদে নারী আসন, এবং সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রধান নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা হয়। তবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল ৭০ অনুচ্ছেদ এবং জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যু।
বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের বিষয়ে বিএনপি ঐক্যমত কমিশনের সাথে একমত। তবে তিনি জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত ইস্যুগুলোও সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার পক্ষে মত দেন। তার মতে, রাষ্ট্রে যুদ্ধ বা সংকটকালীন পরিস্থিতিতে জাতীয় সংসদকে ঐক্যমতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তাই এসব বিষয় সংবিধানে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা উচিত।
তিনি বলেন, “আস্থা ভোট, অর্থবিল এবং সংবিধান সংশোধনী বাদে অন্যান্য সকল বিষয়ে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনভাবে মত ও ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকা উচিত।”
তবে বিএনপির এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা সারজিস আলম বলেন, “জাতীয় নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হলে তা অস্পষ্টতা তৈরি করবে এবং এর সুযোগ নিয়ে যেকোনো সিদ্ধান্তকে ‘জাতীয় নিরাপত্তা’ ইস্যু বলে প্রতিষ্ঠা দেয়া হতে পারে।”
এদিকে, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে বিরোধী দলের নেতৃত্ব দেওয়ার দাবি জানান। তিনি বলেন, “যেমন পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি, প্রিভিলেজ কমিটি, পাবলিক আন্ডারস্ট্যান্ডিং কমিটির মতো মূল সংসদীয় কমিটিগুলোর নেতৃত্ব বিরোধী দলের হাতে থাকা উচিত, আর মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট কমিটিতে সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই অংশ নিতে পারে।”
বৈঠকে সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচন পদ্ধতি নিয়েও আলোচনা হয়, তবে এই বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একমত প্রতিষ্ঠা হয়নি।
সবমিলিয়ে সংবিধান সংস্কার প্রক্রিয়ায় ৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একমত থাকলেও জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে দেখা দিয়েছে মতবিরোধ।