ময়মনসিংহের ফুলপুরে বাবা-মেয়ের মৃত্যুর দাবির সত্যতা কী?

ফ্যাক্টচেক: ময়মনসিংহের ফুলপুরে বাবা-মেয়ের মৃত্যুর দাবির সত্যতা কী?
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি হৃদয়বিদারক ছবি ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দাবি করা হয়েছে—ময়মনসিংহের ফুলপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মাইক্রোবাস রাস্তার পাশের খাদের পানিতে ডুবে গেলে এক বাবা তার সন্তানকে বুকে জড়িয়ে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বাঁচানোর চেষ্টা করেন। বলা হচ্ছে, মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও বাবা তার আদরের মেয়েকে বুক থেকে ছাড়েননি এবং পানিতে ডুবে দুজনেরই মৃত্যু হয়।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধান
রিউমর স্ক্যানার টিমের গভীর অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এই দাবিটি সঠিক নয়। ঘটনাটি ২০২০ সালের ১৮ আগস্টের। সেদিন ময়মনসিংহের ফুলপুরে একটি মাইক্রোবাস আত্মীয়ের জানাজায় অংশ নিতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে পড়ে। এতে একই পরিবারের শিশুসহ ৮ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে বুলবুলি নামের একটি মেয়েও ছিল। তবে, প্রচারিত দাবির বিপরীতে মেয়েটির বাবা রতন ওই দুর্ঘটনায় মারা যাননি—তিনি জীবিত ছিলেন।
ভুল তথ্যের পুনরাবৃত্তি
দুঃখজনকভাবে, গত কয়েক বছর ধরে একই ছবি ও ভুল তথ্য বারবার সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে। ছবির ক্যাপশনে প্রতিবারই বলা হয়, বাবা-মেয়ে দুজনেই পানিতে ডুবে মারা গেছেন। অথচ প্রকৃত তথ্য অনুসারে, কেবল মেয়ে বুলবুলি এবং তার পরিবারের অন্য সদস্যরা ওই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান।
পূর্বের ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন
উল্লেখ্য, এর আগেও এই দাবিটি ফেসবুকে বহুবার ছড়ানো হয়েছে। প্রতিবারই রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধান চালিয়ে দাবিটিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করেছে এবং বিস্তারিত ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
সুতরাং, “বাবা-মেয়ের একসঙ্গে মৃত্যুর” নামে যে গল্পটি ইন্টারনেটে প্রচারিত হচ্ছে, সেটি বিভ্রান্তিকর ও ভিত্তিহীন। প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, ময়মনসিংহের ফুলপুরে দুর্ঘটনায় মেয়েটি ও তার পরিবারের সদস্যরা মারা গেলেও তার বাবা রতন বেঁচে যান।
গুজবে কান দেবেন না, যাচাই করে তথ্য গ্রহণ করুন।