কুয়েট উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে অব্যাহতি, শিক্ষার্থীদের অনশন প্রত্যাহার

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)-এর চলমান সংকটের অবসান ঘটেছে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির মাধ্যমে। সোমবার দিবাগত রাত ১২টা ৫০ মিনিটে এ সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরপরই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাদের আমরণ অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. তানজিমউদ্দিন খান নিজ হাতে জুস খাইয়ে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান।
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশঃ এপ্রিল 25, 2025 10:01 অপরাহ্ন

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)-এর চলমান সংকটের অবসান ঘটেছে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির মাধ্যমে। সোমবার দিবাগত রাত ১২টা ৫০ মিনিটে এ সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরপরই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাদের আমরণ অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. তানজিমউদ্দিন খান নিজ হাতে জুস খাইয়ে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন অর রশিদ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে উদ্ভূত সংকট নিরসন ও শিক্ষা কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার লক্ষ্যে কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাসুদ এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস. কে. শরিফুল আলমকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। শিগগিরই সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে এ দুটি শূন্যপদে নতুন নিয়োগ প্রদান করা হবে। ততদিন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো জ্যেষ্ঠ অধ্যাপককে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হবে।

ঘটনার পরপরই ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। রাত ১টার দিকে শিক্ষার্থীরা আনন্দ মিছিল ও স্লোগানে ক্যাম্পাস মুখরিত করে তোলেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের এক দফা দাবি ছিল—উপাচার্যের পদত্যাগ। দাবি পূরণ হওয়ায় শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করেন এবং নিজ নিজ হলে ফিরে যান।

আমরণ অনশন ছাড়াও শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের ভেতরেই পালন করেছেন কফিন মিছিল, কাফন মিছিল, মানববন্ধন ও বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচি। তবে আন্দোলনের পুরোটা সময়জুড়ে তারা ক্যাম্পাসের বাইরে কোনো ধরনের কর্মসূচি পালন করেননি। সাধারণ জনগণের দৈনন্দিন জীবনে কোনো ধরনের বিঘ্ন না ঘটিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে দাবি আদায় করায় আন্দোলনটি ইতোমধ্যে প্রশংসিত হয়েছে খুলনাবাসীর মধ্যে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত সচেতনভাবে জনজীবনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে কেবল নিজেদের ক্যাম্পাসেই কর্মসূচি চালিয়ে গেছেন। সাম্প্রতিককালে দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে জনভোগান্তির উদাহরণ থাকলেও কুয়েটের এই আন্দোলন হয়েছে ব্যতিক্রম। এটি হতে পারে অন্যদের জন্য একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তারা মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বিজয় মিছিলের আয়োজন করবেন। আন্দোলনের সফল সমাপ্তি উদযাপন করতে তাঁরা প্রস্তুত।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পরিবর্তনের এ সিদ্ধান্ত এবং শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ বিজয় এখন কুয়েট ক্যাম্পাসে একটি ইতিহাস হয়ে থাকবে। ভবিষ্যতে শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়নের ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

সম্পর্কিত-
0%
0%
0%
0%