ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ মর্গে তরুণীর লাশ ধর্ষণের ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড়

ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ (মমেক) মর্গে এক ২০ বছর বয়সী তরুণীর লাশ ধর্ষণের ঘটনায় দেশজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গেই ময়মনসিংহের নারী নেত্রী ও সুশীল সমাজের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
ঘটনায় অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছে ১৯ বছর বয়সী আবু সাঈদকে। হালুয়াঘাট থানার পুলিশ তাকে হালুয়াঘাট পৌরসভার পাঠাগার মোড় এলাকা থেকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় আসামি ধর্ষণের ঘটনা স্বীকার করে।
আবু সাঈদ হালুয়াঘাট উপজেলার খন্দকপাড়া গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে এবং হালুয়াঘাট থানা পুলিশের লাশ বাহক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বুধবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে তাকে ময়মনসিংহ চিফ জুডিশিয়াল আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানান, ভিকটিমের শরীরে ‘তাজা বীর্য’ পাওয়া গেছে, যা ধর্ষণের প্রমাণ। তবে ধর্ষণের ঘটনাটি কোথায় ঘটেছে, তা নির্ধারণের জন্য পুলিশি তদন্ত চলছে।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ময়মনসিংহ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মনিরা বেগম বলেন, “এ ঘটনা শুধু বর্বরতা নয়, এটি সমাজের জন্য বড় ধাক্কা। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দ্রুত হওয়া উচিত।”
ময়মনসিংহ জেলা মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি এ এইচ এম খালেকুজ্জামান বলেন, “এ ধরনের ঘটনা বিকৃত মানসিকতার পরিচয় বহন করে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের সংরক্ষিত মর্গে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা কিভাবে ঘটলো, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।”
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “আসামিকে দ্রুত গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে যেন জামিন না হয় এবং দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করা যায়। জেলা পুলিশের মাধ্যমে মসজিদ-মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন জায়গায় সচেতনতামূলক সভা করা হচ্ছে।”
অন্যদিকে, মামলার এজাহার অনুযায়ী, ওই অভিযুক্ত আল মামুন (২৮) এর নামে ২৫ সেপ্টেম্বর জেলার একটি মহিলা মাদ্রাসার ১৪ বছর বয়সী ছাত্রীকে জোরপূর্বক জয়পুরহাট নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। সেখানে তাকে আটকিয়ে ধর্ষণ করা হয় এবং ১৫ দিন পর বাড়ি ফেরানো হয়। এরপর ভিকটিমের পরিবার মামলা করে, যা বর্তমানে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে তদন্তাধীন।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সারা দেশে ধর্ষণবিরোধী সচেতনতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
