রাজশাহীতে কোচিং সেন্টারে যৌথ বাহিনীর অভিযান, অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধার, ৩ জন আটক

রাজশাহীর কাজীরগঞ্জ এলাকায় একটি কোচিং সেন্টারে যৌথ বাহিনীর অভিযানে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় তিনজনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
শুক্রবার ভোর রাত সাড়ে ১টার দিকে রাজশাহীর ‘ডক্টর ইংলিশ’ নামের কোচিং সেন্টারে সেনাবাহিনীর ৪০তম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট (মেকানাইজড) এই অভিযান শুরু করে। সকাল ৯টা ৩০ মিনিট থেকে কোচিং সেন্টারটি ঘিরে ফেলে সেনাসদস্যরা এবং পাশের রাস্তা বন্ধ করে দেয়।
বিকেলে রাজশাহী আর্মি ক্যাম্প থেকে জারি করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এক মাসের গোয়েন্দা নজরদারির ভিত্তিতে এ অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
আটককৃতরা
অভিযানে কোচিং সেন্টারের মালিক মনতাসেবুল আলম অনিন্দ্য, কর্মচারী মো. রবিন ও মো. ফয়সালকে আটক করা হয়েছে। মনতাসেবুল আলম রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি শফিউল আলম লাট্টুর ছেলে। এছাড়া তারা সাবেক রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের আত্মীয়।
মনতাসেবুল আলম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক রেজাউল করিম হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। তবে তিনি পরবর্তীতে ওই মামলায় খালাস পান। কোচিং সেন্টারটি তাদের পারিবারিক ভবনের নিচতলায় অবস্থিত।
উদ্ধারকৃত সামগ্রী
অভিযানে উদ্ধার করা হয়েছে –
- তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি
- সেনাবাহিনীর মানের দূরবীন ও স্নাইপার স্কোপ
- ছয়টি দেশীয় অস্ত্র
- সাতটি বিদেশি তৈরি ধারালো দা
- পাঁচটি উচ্চমানের ওয়াকিটকি সেট
- একটি সেনা মানের জিপিএস ডিভাইস
- একটি টেজার গান
- দেশি-বিদেশি গুলি
- প্রচুর অব্যবহৃত সিমকার্ড
- বোমা তৈরির সরঞ্জাম
- ছয়টি কম্পিউটার সেট
- নগদ ৭ হাজার ৪৪৫ টাকা
- দেশি-বিদেশি মদ ও ১১টি নাইট্রোজেন কার্টিজ
সবগুলো সামগ্রী সক্রিয় অবস্থায় ছিল বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। পরে বোম ডিসপোজাল ইউনিট এসে বিস্ফোরকগুলো নিষ্ক্রিয় করে।
পানিতে অনুসন্ধান
অভিযানের অংশ হিসেবে আশপাশের একটি পুকুরেও তল্লাশি চালায় ডুবুরি দল। দুপুর ৩টা পর্যন্ত দুইজন ডুবুরি সেখানে অস্ত্র খোঁজার কাজ চালিয়ে যান।
পরিবারের দাবি
এদিকে, অভিযানের সময় আটক রবিনের মা নাসরিন বেগম ঘটনাস্থলে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি দাবি করেন, তার ছেলে নির্দোষ এবং কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নয়। মাত্র এক মাস আগে তিনি কোচিং সেন্টারে ঝাড়ু-পরিষ্কার করার কাজ শুরু করেছিলেন।