যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আপোষ নয়: রাশিয়া থেকে তেল কেনা নিয়ে প্রথমবার মুখ খুললেন মোদি

রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কেনা ও বাণিজ্য সংক্রান্ত ইস্যুতে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি জানিয়েছেন, কৃষক, জেলে ও খেটে খাওয়া মানুষের অধিকার রক্ষায় প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও কোনো আপোষে যাবে না ভারত। ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর বৃহস্পতিবার প্রথমবার এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন মোদি।
তিনি বলেন, “ভারত কখনোই নিজের জনগণ—বিশেষ করে কৃষক, পশুপালক ও জেলেদের স্বার্থের সঙ্গে আপোষ করবে না। দেশবাসীর কল্যাণে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে ভারত স্বাধীন।”
এর আগে বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের রপ্তানি পণ্যে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন। এর ফলে ভারতের ওপর মোট শুল্ক দাঁড়াল ৫০ শতাংশে, যা এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ।
ওয়াশিংটনের এমন পদক্ষেপকে “অযৌক্তিক” ও “অগ্রহণযোগ্য” আখ্যা দিয়ে প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে ভারতের শীর্ষ পর্যায়ের নীতিনির্ধারকরা। দেশটির সব রাজনৈতিক দল বাণিজ্য সংকট মোকাবেলায় একত্র হয়েছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এই সিদ্ধান্তকে “ইকোনোমিক ব্ল্যাকমেইল” হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “দুর্বলতা ঢাকতে গিয়ে মোদি যেন জনগণের স্বার্থ ভুলে না যান।”
তিনি জাতীয় স্বার্থে অবিলম্বে একটি জরুরি সংসদ অধিবেশনের আহ্বান জানান।
এদিকে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করায় কেবল ভারতকেই কেন অতিরিক্ত শুল্ক দিতে হচ্ছে—এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের বলেন, “ভারত রাশিয়া থেকে তেল কিনে দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা বাড়াচ্ছে। শুধু ভারত নয়, রুশ মিত্র চীনসহ আরও অনেক দেশকে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হবে। শিগগিরই নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হবে।”
ট্রাম্পের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ভারতের বাণিজ্য নীতিকে দুর্বল আখ্যা দিয়ে বলেন, “ভারত আমাদের দেশের পণ্য কিনে বিপুল ডলার আয় করছে, আবার সেই ডলার দিয়েই রাশিয়া থেকে তেল কিনছে, যা ইউক্রেনে যুদ্ধকে উসকে দিচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা আমেরিকার সাধারণ মানুষের করের টাকায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলছি। এর মধ্যে ভারত যদি রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ায়, তাহলে তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”
তবে কঠিন পরিস্থিতিতেও আপোষ নয়, বরং বিকল্প বাজারের সন্ধানে নামছে মোদি সরকার। মার্কিন শুল্কে ভারতের পোশাক শিল্প, কৃষি পণ্যসহ বিভিন্ন রপ্তানি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, তবে নয়া দিল্লি বলছে—জাতীয় স্বার্থে ভারতের অবস্থান দৃঢ় থাকবে।