আইপিএল ২০২৫: ব্যাঙ্গালুরু বনাম পাঞ্জাবের ফাইনালে উত্তেজনার চূড়ান্ত মুহূর্তে আরসিবির দুর্দান্ত জয়

আইপিএল ২০২৫: ব্যাঙ্গালুরু বনাম পাঞ্জাবের ফাইনালে উত্তেজনার চূড়ান্ত মুহূর্তে আরসিবির দুর্দান্ত জয়
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশঃ জুন 4, 2025 12:47 পূর্বাহ্ন

আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে আজ অনুষ্ঠিত হলো আইপিএল ২০২৫-এর ফাইনাল ম্যাচ। রোমাঞ্চ, চাপ, উল্লাস আর বেদনার এক মহারণ দেখল ভারতীয় প্রিমিয়ার লিগের এই চূড়ান্ত লড়াইয়ে, যেখানে মুখোমুখি হয়েছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও পাঞ্জাব কিংস। হাজারো দর্শকের গর্জন আর ক্যামেরার ঝলকে মুখর স্টেডিয়াম সাক্ষী রইল আরও একটি ক্রিকেট ঐতিহ্যের।

টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স। মাঠে নামেন ফাফ ডু প্লেসিস ও ফিল সল্ট। শুরুটা ছিল বেশ আত্মবিশ্বাসী। সল্ট ঝড়ের গতিতে রান তুলতে থাকেন—মাত্র ৯ বলেই করেন ১৯ রান। তবে ফাফ দ্রুত ফিরে যান। এরপর ক্রিজে আসেন বিরাট কোহলি, যিনি আজ ছিলেন কিছুটা নিষ্প্রভ। পাওয়ারপ্লেতে মাত্র ১৩ রান করেন ১০ বলে। স্পিন ও পেসের দাপটে তার ব্যাটে দেখা যায়নি আগের মতো ঝলক।

এদিকে মিডল অর্ডারে নামেন ইংল্যান্ডের জশ ইংলিস। শুরুটা ধীরে হলেও পরে মারমুখী হয়ে ওঠেন। সঠিক সময়ে চালিয়ে দেন উইকেটের চারপাশে শট। তার পাশে ছিলেন তরুণ প্রিয়াংশ আর্য, যিনি নিজের প্রথম ফাইনালেই সাহসী ব্যাটিং করে দলকে এগিয়ে নিয়ে যান। শেষে কাইল জেমিসন নামলে ইনিংসে আসে গতি। শেষ পাঁচ ওভারে বেঙ্গালুরু তোলে ৫৫ রান। ইনিংস থামে ১৯২ রানে।

জবাবে ব্যাট করতে নামে পাঞ্জাব কিংস। শুরুটা মন্দ ছিল না। প্রথম কয়েক ওভারে তারা রান তুলে রাখে সমানতালে। কিন্তু সপ্তম ওভারে ইউজভেন্দ্র চাহাল আক্রমণে নামলে বদলে যায় খেলার রং। তার ঘূর্ণিতে দ্রুত তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট হারিয়ে বসে পাঞ্জাব। মিডল অর্ডারে লিভিংস্টোন কিছুটা লড়াই করার চেষ্টা করেন, তবে সঙ্গীর অভাবে সুবিধা করতে পারেননি।

শেষদিকে কিছু বড় শট খেলেন আর্শদীপ ও রাহুল চাহার, কিন্তু ম্যাচ তখন বেঙ্গালুরুর মুঠোয়। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ২২ রান, কিন্তু পাঞ্জাব করতে পারে মাত্র ৪। ফলে ১৮ রানে জয় ছিনিয়ে নেয় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স।

ম্যাচের শেষে অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিস বলেন, “এই জয় শুধু আমাদের দলের নয়, আমাদের সমর্থকদের জন্যও। দীর্ঘ নয় বছর পর ফাইনালে এসেছি এবং এই জয় আমাদের অনেক দিন মনে থাকবে।”

পাঞ্জাবের অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার বলেন, “আমরা সুযোগ তৈরি করেছিলাম, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাজে লাগাতে পারিনি। তবে দলের অনেক তরুণ খেলোয়াড় আশার আলো দেখিয়েছে।”

এই ম্যাচটি ক্রিকেটের অনিশ্চয়তা, উত্তেজনা ও কৌশলের নিখুঁত সংমিশ্রণ হয়ে উঠেছিল। একদিকে অভিজ্ঞতা, অন্যদিকে তরুণদের সাহসী পদক্ষেপ—সব মিলিয়ে ছিল এক স্মরণীয় সন্ধ্যা। আহমেদাবাদে আজ শুধু একটি ফাইনালই হয়নি, ফুটে উঠেছে ক্রিকেটের আসল সৌন্দর্য।

সম্পর্কিত-
0%
0%
0%
0%