ট্রাম্প-মাস্ক দ্বন্দ্বে নতুন মোড়: ট্রাম্পের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে ফোন নম্বর পাল্টালেন ইলন মাস্ক

বিশ্ব রাজনীতি ও প্রযুক্তি জগতের দুই ক্ষমতাধর ব্যক্তিত্ব—যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং বিশ্বের ধনকুবের ইলন মাস্কের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন এখন আর গোপন নয়। এক সময়ের ঘনিষ্ঠ এই দুই ব্যক্তির মধ্যে সম্প্রতি তৈরি হয়েছে গভীর মতবিরোধ। মূল বিরোধের সূত্রপাত হয়েছে ট্রাম্পের আলোচিত “বিগ বিউটিফুল বিল” ঘিরে, যা বর্তমানে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের স্বাক্ষরিত এই বাজেট ও কর বিলটি ধনীদের কর ছাড় দিলেও সাধারণ জনগণের স্বাস্থ্যসেবা ও খাদ্য সহায়তা কর্মসূচিতে বড় ধরনের কাটছাঁট করেছে। বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে তীব্র সমালোচনা করেন টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক। বিলটির বিরুদ্ধে তার অবস্থান এতটাই জোরালো ছিল যে, মাস্ক ঘোষণা দেন তিনি নতুন একটি রাজনৈতিক দল—“নিউ আমেরিকা পার্টি”—গঠন করবেন।
এই রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের মধ্যেই সামনে এসেছে আরও একটি চমকপ্রদ তথ্য। মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার মাইক জনসন দাবি করেছেন, ইলন মাস্ক সম্প্রতি নিজের মোবাইল ফোন নম্বর পরিবর্তন করেছেন, এবং তিনি এই পদক্ষেপ নেন ট্রাম্পের সঙ্গে প্রকাশ্য বিরোধের পরপরই।
একটি সাক্ষাৎকারে জনসন জানান, “বিগ বিউটিফুল বিল” নিয়ে বিবাদের সময় তিনি মাস্ককে একটি ক্ষুদেবার্তা পাঠাতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তখনই বুঝতে পারেন মাস্ক তার নম্বর পরিবর্তন করেছেন। এর আগে জনসন বলেছিলেন, বিলিয়নিয়ার মাস্ক ট্রাম্পের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে তার সঙ্গে সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন।
বিষয়টি এখন রাজনৈতিক মহলে আলোচনার শীর্ষে। একদিকে ট্রাম্প প্রশাসনের বিতর্কিত করনীতি, অন্যদিকে মাস্কের নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা—এই দুইয়ের সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে সৃষ্টি হয়েছে নতুন উত্তেজনা। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ইলন মাস্কের এই পদক্ষেপ শুধু ব্যক্তিগত নয়, বরং ভবিষ্যতের এক বৃহৎ রাজনৈতিক রণনীতিরই অংশ হতে পারে।
🔍 পটভূমি:
“বিগ বিউটিফুল বিল” নামের বাজেটটি ধনীদের কর সুবিধা দিলেও, লক্ষাধিক নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় সেবাদান কর্মসূচিতে ব্যাপক কাটছাঁট করে। বিষয়টি নিয়ে ডেমোক্রেটিক পার্টি ছাড়াও অনেক বিশিষ্ট নাগরিক, অর্থনীতিবিদ এবং মানবাধিকার সংগঠন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইলন মাস্কের এই দ্বন্দ্ব কেবল দুই ব্যক্তির মধ্যকার মতপার্থক্য নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি, রাজনীতি এবং সমাজ ব্যবস্থার গভীর একটি বিভাজনকেও সামনে নিয়ে এসেছে। ইলন মাস্কের নম্বর পরিবর্তনের মতো ব্যক্তিগত পদক্ষেপ এখন পরিণত হয়েছে একটি রাজনৈতিক বার্তায়—তিনি আর ট্রাম্পের ফোন তুলতে চান না।