উত্তর কোরিয়ায় নতুন যুদ্ধজাহাজ উদ্বোধনে বড় দুর্ঘটনা, ‘অপরাধমূলক কাজ’ বলে নিন্দা কিম জং উনের

ছবি সংগ্রহকৃত
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন সম্প্রতি একটি নতুন যুদ্ধজাহাজের উদ্বোধনকালে ঘটে যাওয়া “গুরুতর দুর্ঘটনা”কে ‘অপরাধমূলক কাজ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন এবং এটিকে মোটেই সহনীয় নয় বলে মন্তব্য করেছেন।
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, ৫,০০০ টন ওজনের এই ডেস্ট্রয়ারের (destroyer) নিচের অংশের কিছু অংশ ধসে পড়ায় জাহাজটি ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যায়। উদ্বোধনের সময় ঘটনাস্থলেই উপস্থিত ছিলেন কিম জং উন।
ঘটনার পরপরই কিম নির্দেশ দিয়েছেন, আগামী জুনে অনুষ্ঠিতব্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্টি সভার আগেই যুদ্ধজাহাজটি পুনরায় মেরামত করতে হবে এবং যারা এটির নকশা ও নির্মাণে জড়িত ছিল, তাদেরকে দায়ী করে উপযুক্ত জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। তিনি বলেন, “এই ঘটনায় এক মুহূর্তেই আমাদের জাতির মর্যাদা ও গর্ব গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”
সংবাদমাধ্যমে হতাহতের কোনো খবর প্রকাশ করা হয়নি।
কিম এই দুর্ঘটনার জন্য “চূড়ান্ত অসতর্কতা, দায়িত্বজ্ঞানহীনতা এবং বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের অভাব”কে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, “যারা এই দায়িত্বজ্ঞানহীন ভুল করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে আগামী মাসে অনুষ্ঠিতব্য প্লেনারি সভায়।”
উল্লেখ্য, উত্তর কোরিয়ায় এমন অভ্যন্তরীণ দুর্ঘটনার খবর প্রকাশ খুবই বিরল। তবে অতীতেও হাতে গোনা কয়েকটি ঘটনায় তারা স্বীকারোক্তি দিয়েছে। গত বছরের নভেম্বর মাসে একটি সামরিক স্যাটেলাইট মাঝ আকাশে বিস্ফোরিত হওয়ার ঘটনা “চরম ব্যর্থতা” হিসেবে বর্ণনা করে সরকার দায়ী কর্মকর্তাদের সমালোচনা করেছিল। এছাড়া ২০২৩ সালের আগস্টে আরও একটি ব্যর্থ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য জরুরি বুস্টিং সিস্টেমে ত্রুটিকে দায়ী করলেও তখন বলা হয়েছিল এটি “তেমন বড় কোনো বিষয় নয়”।
বৃহস্পতিবারের এই দুর্ঘটনার কয়েক সপ্তাহ আগেই উত্তর কোরিয়া তাদের পশ্চিম উপকূলে একটি ৫,০০০ টন ক্ষমতাসম্পন্ন নতুন যুদ্ধজাহাজ উন্মোচন করেছিল, যা একসঙ্গে ৭০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র বহনে সক্ষম বলে জানানো হয়েছিল। সেই সময় কিম জং উন এই যুদ্ধজাহাজটিকে দেশের নৌবাহিনী আধুনিকীকরণের পথে এক “বড় সাফল্য” হিসেবে বর্ণনা করেন এবং জানান, এটি আগামী বছর থেকেই কার্যকরভাবে মোতায়েন করা হবে।
এই দুর্ঘটনার পর যুদ্ধজাহাজ নির্মাণে জড়িতদের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, উত্তর কোরিয়ায় মানুষ প্রায় যে কোনো বিষয়ে কারাবন্দি হতে পারে— এমনকি দক্ষিণ কোরিয়ার একটি ডিভিডি দেখার মতো ছোটখাটো কারণে পর্যন্ত।