ইউটিউব নিয়ে এলো ‘ইফেক্ট মেকার’: এখন নিজের মতো করে তৈরি করুন শর্টস ইফেক্ট!

                   
ইফেক্ট মেকার মেকারের ছবি
                 
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশঃ জুন 25, 2025 9:15 পূর্বাহ্ন
                       
                           

ইউটিউব এবার চালু করেছে অত্যাধুনিক একটি টুল “Effect Maker” যার মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা নিজের মতো করে ইফেক্ট তৈরি করে তা ইউটিউব শর্টসে ব্যবহারের জন্য প্রকাশ করতে পারবেন। ইফেক্ট মেকার ব্যবহার করে আপনি যেমন সাধারণ কালার ফিল্টার তৈরি করতে পারবেন, তেমনি চাইলে জটিল ও ইন্টারঅ্যাকটিভ (ইন্টারেক্টিভ) ইফেক্টও ডিজাইন করা সম্ভব হবে।

শুধুমাত্র ডেস্কটপে ব্যবহারযোগ্য

ইফেক্ট মেকার ব্যবহার করতে হলে যেতে হবে effects.youtube.com ওয়েবসাইটে, শুধুমাত্র কম্পিউটারের ক্রোম ব্রাউজার ব্যবহার করেই এটি ব্যবহারযোগ্য। একটি নতুন প্রজেক্ট শুরু করতে “Start a project” সেকশনে প্লাস চিহ্নে ক্লিক করলেই আপনি চলে যাবেন প্রজেক্ট এডিটিং পেজে।

ইফেক্ট মেকারের মূল বৈশিষ্ট্য

ইফেক্ট তৈরির সময় আপনি পাবেন নিচের কিছু গুরুত্বপূর্ণ টুল ও ফিচার:

  • Undo/Redo: ভুল সংশোধনের সুবিধা
  • Auto Save: আপনার প্রজেক্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংরক্ষিত হবে
  • Preview on Device: ফোনে কিউআর স্ক্যান করে প্রাকদর্শন
  • Submit: ইফেক্ট তৈরি শেষ হলে রিভিউয়ের জন্য পাঠানোর অপশন

ইফেক্ট তৈরির ধাপ

১. Transform Tools: ২ডি ও ৩ডি দৃশ্যের মধ্যে টগল করা, বস্তু সরানো, ঘোরানো বা আকার বড়-ছোট করার জন্য ব্যবহৃত হয়।

২. Objects ও Assets Tab: ইফেক্ট তৈরিতে ব্যবহৃত সকল উপাদান যেমন ছবি, ৩ডি মডেল, LUT (কালার ফিল্টার), অ্যানিমেশন ইত্যাদি আপলোড ও সংগঠনের সুবিধা।

  1. Color Filters: নিজস্ব LUT আপলোড করে বা Effect Maker-এই ফিল্টার তৈরি করে ফেস/ভিডিওতে আলাদা আবহ সৃষ্টি করা যায়।
  2. Face Effects:
    • Face Paint: ফেসে মেকআপ বা পেইন্ট এফেক্ট যোগ করার সুবিধা
    • Face Accessories: ফেসে স্টিকার বা ৩ডি অবজেক্ট যুক্ত করা যায়
    • Stretch: ফেসের আকৃতি পরিবর্তন করে ফানি বা অদ্ভুত লুক তৈরি করা যায়
  3. Body Segmentation: ব্যাকগ্রাউন্ড বাদ দিয়ে শুধু মানুষের অবয়ব কেটে নিয়ে নতুন পরিবেশে বসানো যায়।
  4. Camera Feed & Text: রিয়েলটাইম ক্যামেরা ভিউ এবং টেক্সট যুক্ত করা যায়।
  5. 3D Elements & Lights: 3D অবজেক্ট ও আলো যুক্ত করে আরও বাস্তবসম্মত ইফেক্ট তৈরির সুযোগ।
  6. Visual Scripting: ইন্টারঅ্যাকটিভ ইফেক্ট তৈরির জন্য ট্রিগার, লজিক, কন্ট্রোল ফ্লো, টাইমিং ইত্যাদি নোড ব্যবহার করে অটোমেটেড ইফেক্ট তৈরি করা সম্ভব।

উদাহরণ: একটি এলিয়েন ইফেক্ট তৈরির ধাপ

ইউটিউব একটি সহজ উদাহরণ দিয়ে দেখিয়েছে কিভাবে “Space Alien” নামক একটি ইফেক্ট তৈরি করা যায়:

  • প্রথমে Color Filter ব্যবহার করে সবুজ টিন্ট যোগ করা
  • এরপর Face Paint-এ সবুজ রঙের ইমেজ যোগ করে সেটিকে ফেসে ব্লেন্ড করা
  • Stretch Tool ব্যবহার করে মুখের আকৃতি এলিয়েনের মতো করা
  • Face Accessories-এ সবুজ অ্যান্টেনা যোগ করা
  • অবশেষে Body Segmentation ব্যবহার করে ব্যাকগ্রাউন্ডে মঙ্গলগ্রহের একটি কার্টুন ল্যান্ডস্কেপ বসানো

এইভাবে একসাথে কালার, ফেস পেইন্ট, স্ট্রেচ, অ্যাক্সেসরিজ এবং ব্যাকগ্রাউন্ড মিলে তৈরি হয় একটি সম্পূর্ণ এলিয়েন ইফেক্ট।

ইফেক্ট সাবমিট ও রিভিউ

যখন ইফেক্ট তৈরি শেষ, তখন উপরের ডান কোণে থাকা “Submit” বাটনে ক্লিক করে ইফেক্ট রিভিউয়ে পাঠানো যায়। আপনাকে একটি থাম্বনেইল, নাম ও বিবরণ দিতে হবে, যা ইউটিউবের নীতিমালা অনুযায়ী পর্যালোচনা করা হবে।

আপনার ইফেক্ট যদি নীতিমালা মেনে চলে তবে সেটি “Active” হিসেবে প্রকাশিত হবে এবং অন্যরা শর্টসে তা ব্যবহার করতে পারবেন। তবে “Needs Revision” দেখালে কিছু পরিবর্তন করে পুনরায় জমা দিতে হবে।

সতর্কতা

ইফেক্ট তৈরির সময় অবশ্যই ইউটিউবের নীতিমালা মেনে চলতে হবে, বিশেষ করে নিচের দিকগুলোতে:

  • কারিগরি ত্রুটি
  • ক্ষতিকর বা অবমাননাকর কনটেন্ট
  • ভুল নাম বা বিভ্রান্তিকর থাম্বনেইল

ইউটিউব হেল্প সেন্টারে ইফেক্ট সম্পর্কিত নীতিমালা বিস্তারিতভাবে দেওয়া আছে।


সংক্ষেপে, ইউটিউবের “Effect Maker” টুলটি কনটেন্ট নির্মাতাদের জন্য একটি বড় সুযোগ। এখন থেকে কেউ চাইলে নিজের মতো করে কালার ফিল্টার, ফেস অ্যাক্সেসরিজ, ব্যাকগ্রাউন্ড, বা ইন্টারঅ্যাকটিভ ইফেক্ট তৈরি করে ইউটিউব শর্টসে ব্যবহার করতে পারবেন, যা আরও বেশি সৃজনশীল ও আকর্ষণীয় ভিডিও তৈরির পথ খুলে দিচ্ছে।

                           

তথ্যসূত্র: ইউটিউব

                 
0%
0%
0%
0%