বিশাল তথ্যফাঁস: ১৮ কোটি ইমেইল ও পাসওয়ার্ড ডার্ক ওয়েবে, বড় সাইবার হামলার আশঙ্কা

বর্তমান আধুনিক প্রযুক্তির যুগে তথ্যই সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। আর এই তথ্য হাতিয়ে নিতে আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে সাইবার অপরাধীরা। সম্প্রতি অনলাইনে ফাঁস হয়েছে প্রায় ১৮ কোটি ৩০ লাখ ইমেইল ঠিকানা ও পাসওয়ার্ড। ইতোমধ্যে এসব চুরি করা তথ্য ডার্ক ওয়েবসহ গোপন সাইবার প্ল্যাটফর্মে বিক্রি হচ্ছে বলে জানা গেছে। ফলে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের সাইবার হামলা। নতুন এই ঘটনায় বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে হওয়া সবচেয়ে বড় তথ্যফাঁসের ঘটনার একটি এটি। ধারণা করা হচ্ছে, ফাঁস হওয়া ইমেইলগুলোর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ জনপ্রিয় ইমেইল সেবা জিমেইলের ব্যবহারকারীদের।
তবে গুগল জানিয়েছে, তাদের সার্ভার বা সিস্টেম হ্যাক হয়নি। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, ফাঁস হওয়া তথ্য এসেছে বিভিন্ন ব্যক্তিগত কম্পিউটার ও ব্রাউজার থেকে, যেগুলো আগে থেকেই ক্ষতিকর সফটওয়্যারে আক্রান্ত ছিল। সেই ম্যালওয়্যার আক্রান্ত ডিভাইসগুলো থেকেই লগইন তথ্য সংগ্রহ করে ডার্ক ওয়েবে বিক্রি করেছে হ্যাকাররা।
বিশ্লেষকদের মতে, ঘটনাটি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। কারণ অনেক ব্যবহারকারী একই পাসওয়ার্ড একাধিক সাইটে ব্যবহার করেন। এতে শুধু ইমেইল নয়, অনলাইন ব্যাংকিং, কেনাকাটা সম্পর্কিত অ্যাকাউন্ট এমনকি অফিসের ইমেইলও ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
সাইবার নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ প্ল্যাটফর্মের একজন পরিচালক জানিয়েছেন, নতুন এই ডেটাসেটটির নাম ‘সিন্থনেট স্টিলার লগ থ্রেড ডেটা’। এটি কোনো নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট থেকে নয়, বরং বিশ্বজুড়ে অসংখ্য ভাইরাস–সংক্রমিত ডিভাইস থেকে সংগ্রহ করা লগইন ফাইল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
এই তথ্যভান্ডার যুক্ত করা হয়েছে একটি অনলাইন নিরাপত্তা যাচাইকরণ সাইটে, যেখানে যে কেউ নিজের ইমেইল লিখে দেখতে পারবেন তার তথ্য ফাঁস হয়েছে কিনা।
অন্যদিকে যাদের সন্দেহ হচ্ছে যে তাদের জিমেইল অ্যাকাউন্টে অনাকাঙ্ক্ষিত প্রবেশ ঘটেছে, তাদের গুগলের নিরাপত্তা যাচাই টুল ব্যবহার করতে পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এই টুলের মাধ্যমে অপরিচিত ডিভাইস, সন্দেহজনক কার্যকলাপ বা তৃতীয় পক্ষের অ্যাক্সেস খুঁজে বের করা যায়। কোনো অস্বাভাবিকতা পেলেই তা সঙ্গে সঙ্গে মুছে ফেলতে বা বন্ধ করতে বলা হয়েছে।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এখনই পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা উচিত, প্রতিটি অ্যাকাউন্টে আলাদা ও শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা প্রয়োজন এবং অবশ্যই দুই স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
ডিজিটাল যুগে ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তাই সচেতন থাকুন, নিরাপদ থাকুন।
