২০২৫ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার যারা

২০২৫ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার যারা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশঃ অক্টোবর 7, 2025 6:25 অপরাহ্ন

কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যাকে এক নতুন দিগন্তে নিয়ে যাওয়ার স্বীকৃতিস্বরূপ, এ বছর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার যৌথভাবে পেলেন তিনজন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী: জন ক্লার্ক, মিশেল এইচ. ডেভোরেট এবং জন এম. মার্টিনিস

বিজ্ঞাপন

রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস মঙ্গলবার সুইডেনের স্টকহোমে এক প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে তাঁদের নাম ঘোষণা করে। এই তিন বিজ্ঞানী তাঁদের যুগান্তকারী আবিষ্কার “বৈদ্যুতিক বর্তনীর মধ্যে স্থূল কোয়ান্টাম যান্ত্রিক টানেলিং এবং শক্তির কোয়ান্টাইজেশন আবিষ্কারের জন্য” এই সম্মানে ভূষিত হয়েছেন।

পুরস্কারপ্রাপ্ত গবেষণার তাৎপর্য

পুরস্কারপ্রাপ্ত এই গবেষণার মূল দিকটি হলো—কীভাবে আমাদের পরিচিত বৃহৎ, হাতে ধরা যায় এমন বৈদ্যুতিক সার্কিটেও কোয়ান্টাম মেকানিক্সের অদ্ভুত নিয়মগুলি কাজ করতে পারে, তা প্রমাণ করা। কোয়ান্টাম মেকানিক্স সাধারণত পরমাণু বা অতি-ক্ষুদ্র কণার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য বলে মনে করা হয়। কিন্তু এই তিন বিজ্ঞানী দেখিয়েছেন যে:

১. স্থূল কোয়ান্টাম টানেলিং : তাঁরা এমন একটি অতিপরিবাহী বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা তৈরি করেন, যেখানে ইলেকট্রন বা কণা কোনো দেওয়াল বা বাধাকে ভেদ করে সরাসরি এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় ‘টানেল’ করে যেতে পারে। এটি চিরায়ত পদার্থবিদ্যার নিয়ম অনুযায়ী অসম্ভব, কিন্তু কোয়ান্টাম মেকানিক্সে সম্ভব।

বিজ্ঞাপন

২. শক্তির কোয়ান্টাইজেশন : তাঁরা আরও প্রমাণ করেছেন যে, তাঁদের তৈরি সার্কিটটি তাপমাত্রার খুব কাছাকাছি থেকেও সুনির্দিষ্ট ‘ডোজ’ বা ‘প্যাকেট’ (কোয়ান্টা)-এ শক্তি শোষণ ও বিকিরণ করে। এটি প্রমাণ করে যে, সার্কিটের শক্তি স্তরগুলি নিরবচ্ছিন্ন নয়, বরং কোয়ান্টাম মেকানিক্সের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী বিচ্ছিন্ন বা কোয়ান্টাইজড।

রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস উল্লেখ করেছে, এই গবেষণা কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরির ক্ষেত্রে একটি মৌলিক ভিত্তি স্থাপন করেছে। এই আবিষ্কারগুলি কোয়ান্টাম তথ্য প্রক্রিয়াকরণ -এর পথ খুলে দিয়েছে, যা ভবিষ্যতের দ্রুতগতির গণনা, নির্ভুল সেন্সর এবং নিরাপদ যোগাযোগের ভিত্তি তৈরি করবে।

বিজয়ী বিজ্ঞানীদের পরিচয়

তিন বিজয়ীই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত:

  • জন ক্লার্ক: ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলে-এর গবেষক।
  • মিশেল এইচ. ডেভোরেট: ইয়েল ইউনিভার্সিটি-এর গবেষক।
  • জন এম. মার্টিনিস: ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, সান্তা বারবারা-এর গবেষক।

নোবেল পুরস্কারের অর্থমূল্য

চলতি বছর নোবেল পুরস্কারের অর্থমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনার । তিন বিজ্ঞানী এই অর্থ সমানভাবে ভাগ করে নেবেন। এই সম্মাননা কেবল অর্থের নয়, এটি মানবজাতির জ্ঞানভাণ্ডারে তাঁদের অসামান্য অবদানের চিরন্তন স্বীকৃতি।

তথ্যসূত্র: নোবেল পুরস্কার

0%
0%
0%
0%