সংসদ ভবনের সামনে রণক্ষেত্র: জুলাই যোদ্ধাদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, টিয়ারশেল–সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ

রাজধানীর সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া এভিনিউ শুক্রবার সকালে পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানস্থলে অবস্থান নেওয়া বিক্ষুব্ধ জুলাই যোদ্ধাদের সঙ্গে আইন–শৃঙ্খলা বাহিনীর দফায় দফায় সংঘর্ষ, ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
সকাল থেকেই সংসদ ভবনের সামনে জড়ো হন জুলাই আন্দোলনের কর্মীরা। তারা দাবি জানান নিজেদের স্বীকৃতি এবং জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দেওয়ার। একপর্যায়ে অনুষ্ঠানস্থল থেকে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয় সংসদ ভবনের বাইরে। পরে তারা অবস্থান নেন সংসদের মূল গেটে এবং সেখানে ঢোকার চেষ্টা করলে বাধা দেয় পুলিশ ও এপিবিএন সদস্যরা।
বাধা অমান্য করে সামনে এগোতে চাইলে শুরু হয় সংঘর্ষ। আইন–শৃঙ্খলা বাহিনীর লাঠিচার্জে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকাজুড়ে। কিছুটা পিছু হটেই ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে আন্দোলনকারীরা। বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল ছোড়ে। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হন।
আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, “আমাদের লাঠি চার্জ করছে, টিয়ারশেল মারছে, পাটকেল মারছে। আমাদের পরিচয় থাকা সত্ত্বেও গ্যাজেটভুক্ত সদস্যদেরও আঘাত করা হয়েছে।”
সংসদ ভবনের সামনের এলাকা থেকে ছত্রভঙ্গ হয়ে জুলাই যোদ্ধারা অবস্থান নেন আসাদগেট মোড়ে। সেখানে রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ চালান তারা। পরে আইন–শৃঙ্খলা বাহিনীর ধাওয়ায় আবারও তারা সরে যান।
একজন আন্দোলনকারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “তারা বলল পাঁচ মিনিটের মধ্যে এখান থেকে সরে যান। কেন আমরা সরে যাব? এই সরকার তো আমাদের রক্তের উপরে দাঁড়ানো সরকার। আমাদের চোখের জল, ভাইয়ের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে তারা আজ আমাদেরই ঠেলে দিচ্ছে।”
জুলাই যোদ্ধারা অভিযোগ করেন, সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে ব্যর্থ হয়েছে।
সংঘর্ষের এক ঘণ্টার বেশি সময় পর সংসদ ভবন ও মানিক মিয়া এভিনিউ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয় পুলিশ। শুক্রাবাদ পর্যন্ত আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়।
পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে আছে বলে জানিয়েছে আইন–শৃঙ্খলা বাহিনী। তবে এলাকাজুড়ে এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে।
