নেভি ও এয়ার ফোর্স সিলেকশন বোর্ড-২০২৫ উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস

নেভি ও এয়ার ফোর্স সিলেকশন বোর্ড-২০২৫ উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশঃ আগস্ট 3, 2025 8:43 অপরাহ্ন

বাংলাদেশ নৌবাহিনী সদর দপ্তরে গতকাল শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে ‘নেভি ও এয়ার ফোর্স সিলেকশন বোর্ড-২০২৫’ এর উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। নৌ ও বিমানবাহিনীর উচ্চপদে উন্নয়নের প্রক্রিয়ার সূচনা চিহ্নিত করল এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নৌবাহিনীর ক্যাপ্টেন থেকে কমোডোর, কমান্ডার থেকে ক্যাপ্টেন ও লেফটেন্যান্ট কমান্ডার থেকে কমান্ডার এবং বিমানবাহিনীর গ্রুপ ক্যাপ্টেন থেকে এয়ার কমোডোর, উইং কমান্ডার থেকে গ্রুপ ক্যাপ্টেন এবং স্কোয়াড্রন লিডার থেকে উইং কমান্ডার পদে পদোন্নতির লক্ষ্যে গঠিত এই বোর্ড দক্ষ ও যোগ্য কর্মকর্তাদের নির্বাচনের কাজ করবে। সরকার অনুমোদন সাপেক্ষে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে মিলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের, সকল শ্রেণি-পেশার মুক্তিযোদ্ধা ও ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

তিনি বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর গৌরবময় ইতিহাস, সংগ্রাম ও বীরত্বের কথা স্মরণ করেন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা ও জাতীয় প্রয়োজনে তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ও নিরাপত্তা সংকট মোকাবেলায় জনগণের পাশে দাঁড়ানো, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, উন্নয়নমূলক ও জাতি গঠনের কাজে অংশগ্রহণ এবং জনগণের আস্থা অর্জনের জন্য নৌ ও বিমানবাহিনীর সদস্যদের অভিনন্দন জানান অধ্যাপক ইউনূস।

তিনি বলেন, “সামুদ্রিক সম্পদ সংরক্ষণ ও আহরণের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন সম্ভব।” এই প্রসঙ্গে তিনি গভীর সমুদ্রবন্দর পরিচালনায় নৌবাহিনীর ভূমিকা এবং ‘ব্লু ইকোনমি’ উন্নয়নের লক্ষ্যে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

এছাড়াও তিনি দেশের ব্লু ইকোনমি খাতকে উন্নয়নের লক্ষ্যে মহেশখালী ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (মিডা) প্রতিষ্ঠাসহ সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন এবং নৌ ও বিমানবাহিনীর অবদানকেও বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।

প্রধান উপদেষ্টা নৌ ও বিমানবাহিনীর আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং বলেন, “মাতৃভূমির সেবা ও সুরক্ষায় এই বাহিনী দুটির ভূমিকা অপরিসীম। শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নেও তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রশংসনীয়।”

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, নৌ ও বিমানবাহিনী ভবিষ্যতেও দেশের সংবিধান রক্ষা করে যেকোনো জাতীয় সংকট ও দুর্যোগে জনগণের পাশে থাকবে।

বাহিনীর ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব গঠনের লক্ষ্যে দেশপ্রেমিক, মেধাবী, পেশাদার, সৎ, মানবিক ও নৈতিকভাবে যোগ্য অফিসারদের নির্বাচন করতে সিলেকশন বোর্ডকে যথাযথ নির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত হলে নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম. নজমুল হাসান এবং বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান প্রধান উপদেষ্টাকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান।

তারা বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার ব্যক্তিগত সম্পৃক্ততা ও দিকনির্দেশনা আমাদের বাহিনীর সদস্যদের উদ্দীপনা ও মনোবল বহুগুণে বৃদ্ধি করেছে।” একই সঙ্গে দেশপ্রেম, পেশাগত দক্ষতা, মানবিক গুণাবলি ও নেতৃত্বের যোগ্যতা বিবেচনায় যথোপযুক্ত কর্মকর্তাদের নির্বাচনের মাধ্যমে যুগোপযোগী ও সুসজ্জিত বাহিনী গড়ে তোলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন দুই বাহিনীর প্রধানগণ।

অনুষ্ঠানে উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান শেষে নৌ সদর দপ্তরের প্রাঙ্গণে একটি গাছের চারা রোপণ করেন অধ্যাপক ইউনূস এবং নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী ও বাংলাদেশের সমৃদ্ধির জন্য শুভকামনা জানান।

0%
0%
0%
0%