মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা খাতে যুগোপযোগী সংস্কার ও উন্নয়ন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা খাতে যুগোপযোগী সংস্কার ও উন্নয়ন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশঃ আগস্ট 9, 2025 11:59 পূর্বাহ্ন

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা খাতে যুগোপযোগী সংস্কার ও উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এসব পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থী-বান্ধব, স্বচ্ছ ও আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা।

সরকার ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়, উচ্চমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পরীক্ষার সনদ অনলাইনে সত্যায়নের প্রক্রিয়া শুরু করেছে, যা বিদেশে পড়াশোনা করতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্য বড় সুবিধা হিসেবে কাজ করবে। এখন থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনলাইন সত্যায়ন পাওয়া গেলে শিক্ষার্থীদের আর দূতাবাস থেকে কাগজপত্র সত্যায়ন করাতে হবে না। এতে সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় হবে এবং ভোগান্তিও কমবে।

শিক্ষা প্রশাসনের কাঠামোগত সংস্কারের অংশ হিসেবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে পৃথক দুটি অধিদপ্তরে বিভক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে—মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে শিক্ষা ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ ও দ্রুত সেবা নিশ্চিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পরিকল্পনাটি ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে গ্রহণ করা হয় এবং ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়নের কাজ চলছে।

বেসরকারি মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের জন্য অনলাইন বদলি ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে, যা আগে ছিল না। এতে দীর্ঘদিন একই স্থানে কর্মরত থাকার একঘেয়েমি কমবে এবং নতুন পরিবেশে কাজের অনুপ্রেরণা বাড়বে।

এছাড়া এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রদান করা হচ্ছে, যা পূর্বে হাতে হাতে সম্পন্ন হতো এবং এজন্য শিক্ষকদের বিভিন্ন অফিসে যেতে হতো।

সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী কলেজ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদে রাজনৈতিক প্রভাব কমাতে সরকারি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে পরিচালনা কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিধিমালার খসড়া প্রস্তুত হয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং আগামী আগস্টের মধ্যেই এটি বাস্তবায়ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা খাতে ৪৭ হাজার ৫৬৩ কোটি টাকার বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে বেশি। শিক্ষার মানোন্নয়নে ইতোমধ্যে পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও হালনাগাদ করা হয়েছে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের আওতায় ১ হাজার ৯৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬২টি প্রকল্পের মাধ্যমে শিক্ষা অবকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট ও যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইসিটি অবকাঠামো গড়ে তোলা, যা গবেষণা ও স্টার্টআপ কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করবে।

এছাড়া চলতি অর্থবছরে মাধ্যমিক স্তরের ৫১ লাখ, উচ্চমাধ্যমিকের ৮ লাখ এবং স্নাতক পর্যায়ের এক লাখ ৬৫ হাজার মেধাবী শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের এসব উদ্যোগ শিক্ষা খাতে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের পথে একটি বড় অগ্রযাত্রা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

তথ্যসূত্র: BSS

0%
0%
0%
0%