জাজিরায় সহকারী কমিশনার (ভূমি)-এর বিরুদ্ধে ঘুষ ও দায়িত্বে গাফিলতির অভিযোগ

অভিযুক্ত কর্মকর্তা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত

নিজস্ব প্রতিবেদক জাজিরা
সংশোধনঃ 22 অক্টোবর 2025, 02:44 অপরাহ্ন
জাজিরায় সহকারী কমিশনার (ভূমি)-এর বিরুদ্ধে ঘুষ ও দায়িত্বে গাফিলতির অভিযোগ

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় সরকারি দায়িত্বে নিয়োজিত এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ ও দায়িত্বে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত কর্মকর্তা হলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান। তবে তিনি অভিযোগগুলোকে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন।

বিজ্ঞাপন

অভিযোগকারী লিয়াকত হোসেন, জাজিরা মোহর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (সামাজিক বিজ্ঞান) এবং জয়নগর ইউনিয়নের উত্তর কেবলনগর কাজী কান্দি এলাকার বাসিন্দা। তিনি দাবি করেন, তার পৈত্রিক সম্পত্তি প্রায় ১৭ বছর ধরে চাচাতো ভাই রাজ্জাক বেপারী ও তার সহযোগীদের দখলে রয়েছে। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার পরও সমাধান না পাওয়ায় তিনি সম্প্রতি শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের কাছে জমি উদ্ধারের আবেদন করেন।

জেলা প্রশাসক বিষয়টি তদন্তের জন্য জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) নির্দেশ দেন, যিনি পরবর্তীতে দায়িত্ব দেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসানকে।

লিয়াকত হোসেনের অভিযোগ, “মেহেদী হাসান আমাকে বলেন, জমি উদ্ধারে সহায়তা করতে হলে এক লাখ টাকা দিতে হবে। প্রথমে রাজি না হলেও পরবর্তীতে তার চাপে পড়ে আমি ৮০ হাজার টাকা দিই।” তিনি আরও বলেন, ভূমি কর্মকর্তার নির্দেশে তিনি নিজ উদ্যোগে ও ব্যয়ে এক্সকাভেটর মেশিন ভাড়া করে সরকারি খাল উদ্ধার করেন। “তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, খরচ ফেরত দেবেন এবং জমি বুঝিয়ে দেবেন, কিন্তু কোনো প্রতিশ্রুতিই রাখেননি,” দাবি করেন লিয়াকত।

বিজ্ঞাপন

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে লিয়াকত হোসেন বলেন, “টাকা লেনদেনের কোনো ভিডিও বা অডিও প্রমাণ আমার কাছে নেই, তবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েকজন সাক্ষী রয়েছে যারা বিষয়টি জানেন।”

অন্যদিকে, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মনগড়া। আমি সরকারি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করেছি, কোনো অর্থ লেনদেনের প্রশ্নই আসে না। যাদের সাক্ষী বলা হয়েছে, তাদের কাউকেই আমি চিনি না।”

তিনি আরও দাবি করেন, “যে সাংবাদিক এ বিষয়ে প্রতিবেদন করেছেন, তিনি আগে আমার কাছে সুপারিশ নিয়ে এসে আর্থিক সুবিধা চেয়েছিলেন। আমি তা প্রত্যাখ্যান করায় এখন আমার বিরুদ্ধে ভুয়া প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।”

এ বিষয়ে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক তাহসিনা বেগম বলেন, “অভিযোগের বিষয়টি আমরা জেনেছি। তদন্তের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্তে অনিয়ম বা ঘুষ গ্রহণের প্রমাণ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগটি বর্তমানে প্রাথমিক তদন্ত পর্যায়ে রয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে জাজিরা উপজেলার সরকারি দপ্তর ও সাধারণ মানুষের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।


সম্পর্কিত- ঘুষের অভিযোগ
0%
0%
0%
0%