র‍্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার নাজমা বেগম হত্যা মামলার প্রধান আসামি রিপন মোল্লা

নিজস্ব প্রতিবেদক শরীয়তপুর সদর
প্রকাশঃ 25 অক্টোবর 2025, 05:17 অপরাহ্ন
র‍্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার নাজমা বেগম হত্যা মামলার প্রধান আসামি রিপন মোল্লা

শরীয়তপুরে গৃহকর্মী নাজমা বেগম হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি শহিদুল ইসলাম রিপন মোল্লাকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)-৮ মাদারীপুর ক্যাম্পের একটি বিশেষ দল।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে র‍্যাব-৮ মাদারীপুর ক্যাম্পে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কোম্পানি কমান্ডার মীর মনির হোসেন সাংবাদিকদের জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গত ২৪ অক্টোবর রাতে ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে রিপন মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‍্যাব জানায়, গ্রেপ্তারের সময় রিপনের কাছ থেকে নিহত নাজমা বেগমের স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রিপন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। সে জানায়, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকার লোভেই নাজমা বেগমকে হত্যা করা হয়।

কোম্পানি কমান্ডার মীর মনির হোসেন বলেন, “ঘটনাটি গণমাধ্যমে প্রকাশ পাওয়ার পর ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হলে র‍্যাব-৮ মাদারীপুর ক্যাম্প ছায়া তদন্ত শুরু করে। প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ ও গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে আমরা রিপনের অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হই এবং কেরানীগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করি।”

বিজ্ঞাপন

নিহত নাজমা বেগম শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কাজী কান্দি গ্রামের সেকেন্দার কাজীর মেয়ে। তাকে হত্যা করা হয় গত ২১ অক্টোবর শরীয়তপুর পৌরসভার রূপনগর এলাকায় নিজ ভাড়া বাসায়।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল মালেক মাদবরের বাড়ির একটি ঘরে গৃহকর্মী নাজমা বেগমের গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

প্রায় তিন বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ছেলে নিলয়কে নিয়ে ওই বাসায় ভাড়া থাকতেন নাজমা। সংসারের ভার বহনের জন্য প্রতিদিন অন্যের ঘরে গৃহকর্মীর কাজ করতেন তিনি। মঙ্গলবার সকালে ছেলে স্কুলে গেলে একাই ছিলেন বাড়িতে। দুপুরে স্কুল থেকে ফিরে এসে খাটের ওপর মাকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে যায় নিলয়।

প্রথমে ঘটনাটি আত্মহত্যা হিসেবে সন্দেহ করা হলেও তদন্তে বেরিয়ে আসে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। নিহতের ভাই দ্বীন ইসলাম বাদী হয়ে ২২ অক্টোবর পালং থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

র‍্যাব জানায়, রিপন হত্যার দিন নাজমা বেগমের বাসায় যান এবং সুযোগ বুঝে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে ঘটনাটি আত্মহত্যা হিসেবে চালানোর জন্য গলায় ওড়না পেঁচিয়ে খাটের ওপর ফেলে রাখে।

র‍্যাব কর্মকর্তা আরও জানান, গ্রেপ্তার রিপনকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শরীয়তপুরের পালং থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

নাজমা বেগমের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে শরীয়তপুর পৌরসভার রূপনগর এলাকায়। প্রতিবেশীরা জানান, শান্ত-স্বভাবের এই নারী নিজের সন্তানকে মানুষ করার স্বপ্নে দিনরাত পরিশ্রম করতেন। সেই নারীকে এমন নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছে—এ খবর কেউই মেনে নিতে পারছেন না।

50%
50%
0%
0%