স্কুলছাত্রীকে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় বাবাকে তুলে নিয়ে হত্যার অভিযোগ, বগুড়ায় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাসহ দুজন আটক

ছবিঃ ভিডিও থেকে নেওয়া
বগুড়ায় এক মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে, স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে বাল্যবিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় এক রিকশাচালক বাবাকে তুলে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা জিতু ইসলাম ও তার সহযোগীরা। নিহত ব্যক্তির নাম শাকিল (৩৫), তিনি শহরের শিববাটি শাহী মসজিদ এলাকার মৃত শাজু মিয়ার ছেলে।
নিহতের পরিবারের অভিযোগ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক জিতু ইসলাম বেশ কিছুদিন ধরে শাকিলের স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু শাকিল এতে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হন জিতু। এ নিয়ে দুইজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। শনিবার সকালে সেই বিরোধ চরমে পৌঁছায়।
নিহতের স্বজনরা জানান, শনিবার সকালে জিতুর নেতৃত্বে একদল লোক শাকিলের বাড়িতে হামলা চালায়। পরিস্থিতি আঁচ করে শাকিল পালিয়ে বোনের বাড়িতে আশ্রয় নেন। কিন্তু সেখান থেকেও তাকে ধরে এনে পিটিয়ে ও সুরিকাঘাতে গুরুতর আহত করা হয়। পরে তাকে শহরের ফুলবাড়ি মধ্যপাড়া এলাকার করতোয়া নদীর ঘাটে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা।
নিহতের এক বোন জানান, শাকিল মৃত্যুর আগে বোনের কাছে এসে অনুনয়-বিনয় করে বলেন, “আমাকে লুকিয়ে রাখো, ওরা আমাকে মেরে ফেলবে।” এমনকি শাকিল হামলাকারীদের কাছে ক্ষমাও চান এবং পা ধরেন। তবু তারা ক্ষান্ত হয়নি। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীদের দল আবার ফিরে এসে জোর করে শাকিলকে তুলে নিয়ে যায় এবং নির্মমভাবে হত্যা করে।
শনিবার সন্ধ্যার আগে নদীর ঘাট থেকে শাকিলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ঘটনার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে বগুড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক জিতু ইসলাম এবং তার সহযোগী মতিউর রহমানকে আটক করেছে।
বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক আসলাম আলী বলেন, “ঘটনার পরপরই দুইজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও যারা জড়িত, তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”
নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর দাবি, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তারা জড়িতদের সর্বোচ্চ সাজা—মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছেন। এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “খুনের বদলে খুন চাই, ফাঁসি চাই।”
ঘটনার পর এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদার করেছে।