বাবর-শাহীন ঝলকে পাকিস্তানের সিরিজ জয়

অবশেষে ঘরের মাঠে সমর্থকদের কাঙ্ক্ষিত দৃশ্য উপহার দিল পাকিস্তান—বাবর আজমের দাপুটে ইনিংস আর সিরিজ জয়। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তৃতীয় টি২০তে ৪ উইকেটে জয় পেয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করেছে স্বাগতিকরা।
পাকিস্তানের জয়ে মূল ভূমিকা রাখেন অধিনায়ক বাবর আজম। তার অনবদ্য ৪৭ বলে ৬৮ রানের ইনিংস—যা টি২০ আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে তার ৪০তম পঞ্চাশোর্ধ্ব স্কোর—১ বল বাকি থাকতে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেয়।
দিনের শুরু ছিল শাহীন শাহ আফ্রিদির আগুন ঝরানো স্পেলে। টস জিতে বোলিং নিলে প্রথম ওভারেই তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং অর্ডারে ঝড় তুলেন। কুইন্টন ডি কক ও লুয়ান্দ্রে প্রিটোরিয়াসকে সাজঘরে ফেরান পাকিস্তানের পেস তারকা। ডি কক ইনসুইংয়ে বোল্ড হন আর পরের বলেই প্রিটোরিয়াস ক্যাচ দেন শর্ট ফাইন লেগে। এক পর্যায়ে ডিওয়াল্ড ব্রেভিসের বিরুদ্ধে এলবিডব্লিউ আবেদনও করেন শাহীন, তবে ডিআরএসে দেখা যায় বল স্টাম্পের ওপর দিয়ে যাচ্ছিল। পাওয়ারপ্লে শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর দাঁড়ায় মাত্র ২২/২—যা তাদের টি২০আই ইতিহাসে তৃতীয় সর্বনিম্ন পাওয়ারপ্লে স্কোর।
রিজা হেনড্রিকস (৩৮ বলে ৩৪) কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন। ব্রেভিস ও ডোনোভান ফেরেইরার ছোট ছোট ইনিংসে কিছুটা গতি পেলেও, ফাহিম আশরাফের দুই উইকেটে আবার চাপ বাড়ে প্রোটিয়াদের ওপর। শেষ দিকে করবিন বোশের অপরাজিত ৩০ রান সত্ত্বেও ২০ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা থামে ১৩৯/৮-এ—যা পাকিস্তানের বিপক্ষে যথেষ্ট মনে হয়নি।
জবাবে পাকিস্তানের শুরুটা ভালো ছিল না। সাইম আয়ুব শূন্য রানে ফেরেন। এরপর বোশ ও জর্জ লিন্ডের disciplined বোলিংয়ে রানরেট বাড়তে থাকে। তবে শান্ত ও নিয়ন্ত্রিত ব্যাটিংয়ে বাবর আজম দলকে ধরে রাখেন। সুইপ শটে তিনটি দৃষ্টিনন্দন চারসহ ও উইকেটের ফাঁক খুঁজে স্ট্রাইক ঘুরিয়ে তিনি ইনিংসটি সাজান। আগা সালমানের সঙ্গে ৫২ বলে ৭৬ রানের জুটি মূলত ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
মে ২০২৪-এর পর প্রথম টি২০ ফিফটি করেন বাবর। শেষদিকে তিনি ও সালমান আউট হলেও জয়ের পথ নিশ্চিত হয়ে যায় আগেই। ১৯তম ওভারে ৪ উইকেট হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় পাকিস্তান।
এই জয়ে পাকিস্তান আবারও প্রমাণ করল—শাহীনের পাওয়ারপ্লে আঘাত ও বাবরের শান্ত-সুনিপুণ রানচেজ এখনো তাদের ক্রিকেটের নির্ভরতার প্রতীক।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা: ১৩৯/৮, ২০ ওভার (রিজা হেনড্রিকস ৩৪; শাহীন আফ্রিদি ৩/২৬)
পাকিস্তান: ১৪০/৬, ১৯ ওভার (বাবর আজম ৬৮; করবিন বোশ ২/২৪)
ফল: পাকিস্তান ৪ উইকেটে জয় পেয়ে সিরিজ ২-১
