কক্সবাজারে সাগরে ডুবে পিতা-পুত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু, রাজশাহীতে শোকের ছায়া

কক্সবাজারে সাগরে ডুবে পিতা-পুত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু, রাজশাহীতে শোকের ছায়া
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশঃ জুন 11, 2025 8:31 অপরাহ্ন

ঈদের ছুটিতে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে কক্সবাজার বেড়াতে গিয়েছিলেন রাজশাহীর শাহানুর রহমান। কিন্তু আনন্দের সেই সফর এক মর্মান্তিক ট্র্যাজেডিতে রূপ নেয়। সমুদ্রে ডুবে মৃত্যু হয় তার কলেজপড়ুয়া ছেলে সিফাতের, আর ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ হারান শাহানুর নিজেও।

রাজশাহীর মহিষবাগান এলাকার বাসিন্দা শাহানুর রহমান স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে ঢাকায় যান ঈদ উদযাপন করতে। সেখান থেকেই পরিবারের সবাই মিলে কক্সবাজার ভ্রমণে যান। ঈদের আনন্দঘন মুহূর্তেই ঘটে হৃদয়বিদারক এই দুর্ঘটনা।

জানা যায়, কক্সবাজারের কলাতলি সৈকতে সাগরের জলে নেমেছিলেন সদ্য কলেজ শেষ করা সিফাত। সাঁতার জানতেন না তিনি। এক পর্যায়ে বড় একটি ঢেউয়ে ভেসে যান সিফাত। সঙ্গে থাকা বাবা শাহানুর রহমান কালবিলম্ব না করে ছেলেকে বাঁচাতে ঝাঁপ দেন সাগরে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর ফিরতে পারেননি কেউই।

স্থানীয় লোকজন ও লাইফগার্ড সদস্যদের সহায়তায় উদ্ধার করা হলেও, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। শাহানুরের এক আত্মীয় জানান, “ভাইটা হার্টের সমস্যায় অনেকদিন ধরেই ভুগছিল। তারপরও ছেলেকে বাঁচাতে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়েছেন।”

ঘটনার খবর এখনও জানানো হয়নি শাহানুরের অসীতিপর বৃদ্ধ বাবাকে। রাজশাহীতে পরিবারটির বাড়ি এখন শোকের ছায়ায় আচ্ছন্ন। এক স্বজন বলেন, “আমরা এখনো বলিনি ওনারে। শুধু বলছি হাসপাতালে আছে। ৭২ ঘণ্টা পার হোক তারপর ধীরে ধীরে বলব।”

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নিহত পিতা-পুত্রের মরদেহ বুধবার নাগাদ রাজশাহীতে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

শহরের একাংশে ঈদের উৎসব চললেও, মহিষবাগান এলাকায় এখন শোকাবহ পরিবেশ। এলাকাবাসী বলছেন, “শাহানুর আর সিফাত দুজনেই খুব ভালো মানুষ ছিল। এমন মৃত্যু মানা যায় না।”

এ ঘটনা আবারো মনে করিয়ে দিল সাগরস্নানে সতর্কতার প্রয়োজনীয়তা এবং যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের জরুরি বিষয়টি।

0%
0%
0%
0%