কেরানীগঞ্জে তিনজনকে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ টুকরো করলেন শিমুল

ছবি সংগ্রহকৃত
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে স্ত্রীকে পুনরায় বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যা করেন মহিউদ্দিন হাওলাদার ওরফে শিমুল। হত্যাকাণ্ড দেখে ফেলায় চার বছরের ছেলে রাফসান ও ভাড়াটিয়া তরুণী নুপুরকেও একই কায়দায় হত্যা করা হয়। এরপর তিনটি লাশ টুকরো টুকরো করে বুড়িগঙ্গা নদীসহ বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দেন শিমুল। তাকে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য জানিয়েছে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ।
শুক্রবার রাত ৯টার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কালিগঞ্জ মাকসুদা গার্ডেন সিটির সামনে একটি রিকশা এসে থামে। প্লাস্টিকের বস্তাসহ এক যাত্রী নামেন এবং রিকশা চলে যেতেই বস্তাটি ফেলে সরে পড়েন। পুরো দৃশ্য ধরা পড়ে সিসি ক্যামেরায়। স্থানীয়রা বস্তাটি দেখে ট্রিপল নাইনে ফোন করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বস্তা খুলে এক নারীর হাত, পা ও মাথাবিহীন দেহাবশেষ উদ্ধার করে।
মরদেহের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চালিয়ে বস্তার ভেতর একটি ফোন রিচার্জ কার্ড পায় পুলিশ। ওই কার্ডের সূত্র ধরে তারা জানতে পারে নিহত নারীর নাম বিথি। স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, বিথি ও তার ছেলে রাফসান কয়েক দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন।
পরে বিথির ফোন কল রেকর্ড বিশ্লেষণ করে পুলিশ মহিউদ্দিন হাওলাদার ওরফে শিমুলকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে শিমুল জানান, সাত বছর আগে বিথিকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। তিন বছর সংসার করার পর তালাক দেন। বিথি অন্যত্র বিয়ে করে সংসার শুরু করেন এবং রাফসান তার ওই সংসারের সন্তান। শিমুলের দ্বিতীয় স্ত্রী থাকেন জোরাইন এলাকায়। তবে সম্প্রতি বিথির সঙ্গে আবার একত্রে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের মিরেরবাগ এলাকায় একই বাসায় বসবাস শুরু করেন শিমুল।
শিমুলের ভাষ্যমতে, বিথি বিয়ের জন্য চাপ দিলে শুক্রবার সকালে বাসায় গামছা পেঁচিয়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। হত্যাকাণ্ড দেখে ফেলার কারণে চার বছরের শিশু রাফসানকেও গলা চেপে মেরে ফেলেন। এরপর মেঝেতে পড়ে থাকা দুজনের লাশ দেখে ফেলেন ভাড়াটিয়া তরুণী নুপুর। তাকেও হত্যা করেন শিমুল।
পরে তিনটি মরদেহ বাথরুমে নিয়ে উলঙ্গ করে খণ্ড খণ্ড করেন। প্রথমে শিশুটি, পরে বিথি ও নুপুরের দেহ টুকরো করেন যাতে সহজে বহন করা যায় এবং সন্দেহের সৃষ্টি না হয়। তিনটি মরদেহের বিভিন্ন অংশ বুড়িগঙ্গা নদীসহ বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেন তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের পরে শিমুল যথেষ্ট ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন। ইতিমধ্যে নিহত বিথির বড় বোন বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। স্বজনরা হত্যার সঙ্গে জড়িত শিমুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।