বড় সমুদ্রগামী জাহাজ আমদানিতে ভ্যাট অব্যাহতি দিল সরকার

৫ হাজার ডেডওয়েট টনেজ (ডিডব্লিউটি) বা তার বেশি ধারণক্ষমতার সমুদ্রগামী জাহাজ আমদানিতে বিদ্যমান ৭.৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
আজ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুসের সভাপতিত্বে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে (সিএও) অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সাপ্তাহিক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
পরবর্তীতে পররাষ্ট্র সেবা একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “উপদেষ্টা পরিষদের বিশ্বাস, এই কর অব্যাহতি সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতে জাহাজ সংগ্রহে সহায়তা করবে, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের নতুন সুযোগ তৈরি করবে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে।”
এটি কেবল ব্যবসায়িক সুবিধার ব্যবস্থা নয়, বরং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের সক্ষমতা বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সভায় ফিলিস্তিন ইস্যুতে বাংলাদেশের সুদৃঢ় অবস্থান নিয়েও আলোচনা হয়। শফিকুল আলম বলেন, “আমরা সবসময় ফিলিস্তিন প্রশ্নে স্পষ্ট অবস্থান বজায় রেখেছি।” তিনি জানান, আগামী জাতিসংঘের ‘হাই-লেভেল ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন দ্য পিসফুল সেটেলমেন্ট অব দ্য কোয়েশ্চেন অব প্যালেস্টাইন’-এ নিউইয়র্কে বাংলাদেশের অবস্থান উপস্থাপন করবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি একইসঙ্গে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর দোহায় অনুষ্ঠিতব্য ওআইসি জরুরি বৈঠকেও যোগ দেবেন।
বৈঠকে সংস্কার কমিশনগুলোর অগ্রগতিও বিস্তারিতভাবে পর্যালোচনা করা হয়। শফিকুল আলম জানান, এখন পর্যন্ত ৫১টি সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হয়েছে, ৩৭টি আংশিক বাস্তবায়নাধীন এবং বাকি সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। কিছু সুপারিশ রাজনৈতিক প্রকৃতির, যা একটি নির্বাচিত সরকার বাস্তবায়ন করবে।
সংস্কার হচ্ছে না—এমন ধারণা সঠিক নয় জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, “প্রতিটি মন্ত্রণালয় ধারাবাহিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কার্যক্রম চালাচ্ছে। ব্যাংকিং, জ্বালানি, রাজস্ব, শ্রম—প্রায় প্রতিটি খাতেই ইতোমধ্যে সংস্কার হয়েছে, এবং এ প্রক্রিয়া চলমান।”
শ্রম খাতের সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শ্রম কমিশনের ৮২টি সুপারিশের অনেকগুলোই ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে। শ্রম আইন সংশোধন করা হলে বাকি অধিকাংশ সুপারিশও বাস্তবায়িত হবে। শ্রম মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, গত বছরের ১৮ দফা ত্রিপক্ষীয় চুক্তি একটি বড় অর্জন ছিল। ওই চুক্তির অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি কার্যকর হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব এবং আবুল কালাম আজাদ মজুমদারও উপস্থিত ছিলেন।