পাকিস্তানের দাবির সঙ্গে একমত নন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের দাবি যে ১৯৭১ সালের অনিষ্পন্ন বিষয়গুলো সমাধান হয়ে গেছে—তার সঙ্গে তিনি একমত নন।
রবিবার সকালে ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে দুপুরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তৌহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, “আমরা বৈঠকে আমাদের অবস্থান স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছি। বিশেষ করে তিনটি বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান আমি দৃঢ়ভাবে জানাই। এগুলো হলো—আর্থিক দেনা-পাওনার নিষ্পত্তি, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের গণহত্যার স্বীকৃতি ও দুঃখপ্রকাশ, এবং পাকিস্তানে আটকে থাকা নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়া। এই তিনটি বিষয় সমাধান না হলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মসৃণভাবে এগোবে না। উভয় পক্ষই স্বীকার করেছে যে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়গুলো মীমাংসা করতে হবে।”
তৌহিদ হোসেন আরও বলেন, “৫৪ বছরের পুরনো সমস্যাগুলো কোনো এক বৈঠকে সমাধান হবে—এমন আশা করা যায় না। প্রায় ১২–১৩ বছর পর এই বৈঠক হলো, সেটিও হিনা রব্বানির আমন্ত্রণে, কোনো আনুষ্ঠানিক দ্বিপাক্ষিক সফর নয়। তাই এক ঘণ্টার আলোচনায় সব সমাধান হবে—এমনটা ভাবার কারণ নেই।”
ইসহাক দারের দাবি যে দুই দেশের মধ্যে অনিষ্পন্ন বিষয়গুলো ইতিমধ্যে দু’বার সমাধান হয়েছে—এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তৌহিদ হোসেন স্পষ্টভাবে বলেন, “আমি একেবারেই একমত নই। যদি একমত হতাম, তাহলে সমস্যা সমাধান হয়ে যেত। আমরা আমাদের অবস্থান জানিয়েছি, তারাও তাদের অবস্থান জানিয়েছে। তিনটি বিষয় নিয়েই আলোচনা হয়েছে।”
চীনকে ঘিরে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ-পাকিস্তান বৈঠকের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “চীন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে আগ্রহী, পাকিস্তানও তাই। তবে আগের সরকারের আমলে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ইচ্ছাকৃতভাবে ঠেকিয়ে রাখা হয়েছিল। আমরা চাই পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক অন্য যেকোনো দেশের মতো স্বাভাবিক হোক।”