মৌসুমের আরেকটি হতাশাজনক হার: মন্ট্রিয়ালের কাছে ১-০ গোলে হারলো নিউ ইয়র্ক সিটি এফসি

কানাডার মন্ট্রিয়ালে খেলতে গিয়ে নিউ ইয়র্ক সিটি এফসিকে মাঠে নামতে হয় প্রধান কোচ পাসকাল ইয়ানসেনকে ছাড়াই। ক্লাব জানায়, তিনি ব্যক্তিগত কারণে ইউরোপে অবস্থান করছেন, তবে এর বেশি কিছু জানানো হয়নি। ফলে সহকারী কোচ মেহদি বলুচিই দায়িত্বে ছিলেন, কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্বে থেকেও তিনি নিজের প্রথম জয়ের দেখা পেলেন না—বয়েজ ইন ব্লু হেরে বসে ১-০ ব্যবধানে।
অদল-বদলহীন লাইনআপ, তবু হার
চমকপ্রদভাবে, দলটি ঠিক সেই একই একাদশ নিয়ে খেলতে নামে যা গত ম্যাচে আটলান্টা ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে ৪-০ ব্যবধানে জয় পেয়েছিল। অথচ সেই ম্যাচে বেঞ্চে থাকা তায়ভন গ্রে ও মিতজা ইলেনিচ এই ম্যাচেও স্কোয়াডে থাকলেও, তাদের জায়গায় শুরু থেকেই মাঠে নামানো হয় স্ত্রাহিনিয়া তানাসিয়েভিচকে। যদিও তার অতীত পারফরম্যান্সে প্রশ্ন থাকলেও, এবার তার খেলা ছিল কিছুটা উন্নত।
এছাড়া তিন উইঙ্গার ও এক ফরোয়ার্ড নিয়ে আক্রমণাত্মক লাইনআপ সাজানো হয়, যা একটি অ্যাওয়ে ম্যাচে বেশ ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত। দ্বিতীয়ার্ধে কোচ বলুচি যখন আগুস্তিন ওহেদার পরিবর্তে জোনাথন শোরকে নামান, তখন বোঝা যায় তিনি সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করেছেন।
আবারও মন্ট্রিয়ালের বিপক্ষে হতাশা
এ ম্যাচটি ছিল এমন একটি সুযোগ, যেখানে নিউ ইয়র্ক সিটি এফসি অতীতের পরাজয়ের জবাব দিতে পারত। কিন্তু ঠিক আগের ম্যাচের মতোই, তারা ১-০ ব্যবধানে হার মানে মন্ট্রিয়ালের কাছে। এখন পর্যন্ত টানা তিন ম্যাচে কানাডিয়ান দলের কাছে হারলো পিজনরা—যেখানে এর আগে দলটি মন্ট্রিয়ালের কাছে মাত্র দুইবার হেরেছিল।
খেলার ছবি: আত্মবিশ্বাসহীনতা ও রক্ষণভাগের দুর্বলতা
খেলার শুরুতে মনে হচ্ছিল যেন নিউ ইয়র্ক সিটি এফসি পূর্বাঞ্চল কনফারেন্সের তলানিতে থাকা দল। মন্ট্রিয়াল পুরোপুরি দাপটের সঙ্গে বল দখলে রাখে এবং বারবার আক্রমণ চালাতে থাকে। যদিও পরে পিজনরা কিছুটা বলের নিয়ন্ত্রণ নেয়, তবু প্রত্যাশিত আধিপত্য ফের দেখা যায়নি।
২৩তম মিনিটেই গোল হজম করে বসে নিউ ইয়র্ক। ভিক্টর লোতুরি বাইরের দিক থেকে নেয়া এক দুর্দান্ত শটে গোল করেন, যেখানে টমাস রোমেরোর প্রতিরোধ যথেষ্ট ছিল না। বল ক্লিয়ার করতে না পারার ভুলেই এই গোল খেতে হয়।
আক্রমণে হতাশাজনক পারফরম্যান্স
নিউ ইয়র্ক কিছু সুযোগ তৈরি করলেও সেগুলোর অধিকাংশই ছিল অকার্যকর ও হুমকিহীন। মন্ট্রিয়াল বারবার তাদের বল কেড়ে নিচ্ছিল, বিশেষ করে শেষ তৃতীয়াংশে। পাসিংয়ে ছিল অসামঞ্জস্যতা, যা গোলমুখী আক্রমণে বাধা সৃষ্টি করেছে।
মৌনসেফ বাকরার হতাশাজনক ফর্ম আবার ফিরে আসে। ৭৩ মিনিটে বদলি হওয়ার আগ পর্যন্ত তার পারফরম্যান্স দুর্বলই ছিল। বদলি খেলোয়াড় সেমুর রিড তার স্বল্প সময়ের উপস্থিতিতেই তুলনামূলক ভালো পারফর্ম করেছেন।
ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা: সামনে কঠিন সময়
দ্বিতীয়ার্ধে কিছু পরিবর্তন দলকে কিছুটা প্রাণ এনে দিলেও গোলের দেখা মিলেনি। দলীয় অস্থিরতা ও ধারাবাহিকতার অভাব এই মৌসুমে পিজনদের প্লে-অফ লাইনের ওপরে টিকে থাকতে কঠিন করে তুলেছে। কাগজে-কলমে তাদের আরও কয়েকটি ম্যাচ জেতা উচিত ছিল, এবং সেই তালিকায় শনিবারের ম্যাচটিও পড়ে।
এখন জুলাই মাসে নিউ ইয়র্ক সিটি এফসিকে অপেক্ষা করছে একাধিক অ্যাওয়ে ম্যাচ। যেখানে এমন ম্যাচে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও পয়েন্ট নিতে না পারা হতাশাজনক। এটি ছিল আরেকটি হাতছাড়া করা সুযোগ—আরেকটি দুঃখজনক পরাজয়।
সারাংশ:
- ফলাফল: নিউ ইয়র্ক সিটি এফসি ০-১ সিএফ মন্ট্রিয়াল
- গোলদাতা: ভিক্টর লোতুরি (২৩’)
- অন্তর্বর্তী কোচ: মেহদি বলুচি
- স্টার খেলোয়াড়ের পারফরম্যান্স: মৌনসেফ বাকরা ব্যর্থ, সেমুর রিড আলো ছড়িয়েছেন
- পরবর্তী চ্যালেঞ্জ: জুলাই মাসের অধিকাংশ ম্যাচ অ্যাওয়ে মাঠে
এখন সময় আত্মসমালোচনার, কারণ যদি নিউ ইয়র্ক সিটি প্লে-অফে জায়গা পেতে চায়, তবে সময়ের মধ্যেই ঘুরে দাঁড়াতে হবে।