ট্রাম্পের শুল্কনীতি নিয়ে আদালতের চমকপ্রদ রায় ব্যবসায় ও বাণিজ্য অংশীদারদের অনিশ্চয়তায় ফেলেছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফেডারেল আদালত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিস্তৃত শুল্ক আরোপকে অবরুদ্ধ করেছে, যা তার অর্থনৈতিক নীতির জন্য একটি বড় ধাক্কা।

তিনজন বিচারক রায় দিয়েছেন যে, জাতীয় জরুরি অবস্থার আইন ব্যবহার করে ট্রাম্প প্রায় সব দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করে তার সাংবিধানিক ক্ষমতার সীমা অতিক্রম করেছেন – এখন ট্রাম্প কী করতে পারেন, তা নিয়েই আলোচনা চলছে।

ব্যবসায়ীরা ও বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা এখন এই নতুন মোড়ের অর্থ বোঝার চেষ্টা করছেন, লিখেছেন আমাদের ব্যবসা বিষয়ক সম্পাদক সায়মন জ্যাক।

এই মামলাটি শুরু করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও রাজ্য সরকার, এবং এর ফলে হোয়াইট হাউসের সামনে ১০ দিনের সময় রয়েছে আনুষ্ঠানিকভাবে এই শুল্ক বাতিল করার জন্য।

রায়ের কিছুক্ষণ পরই ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, “নির্বাচিত নয়, এমন বিচারকদের কাজ নয় জাতীয় জরুরি পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবিলা করতে হবে, তা নির্ধারণ করা।”

শুল্ক কী, আদালত কী বলেছে, এবং এখন কী হবে? জেনে নিন

 
লাইভ নিউজ আপডেট
2 মাস ago (00:35, 30 মে 2025)

ট্রাম্পের শুল্ক হারানো নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও, ‘আস্থা আছে ট্রাম্পের উপর’ — দাবি হোয়াইট হাউসের

বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লেভিট (Karoline Leavitt) জানান, ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক সংক্রান্ত আদালতের রায়ের পরও বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশ এখনও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা চালিয়ে যেতে প্রস্তুত। আদালতের রায়ে শুল্ক আরোপ অবৈধ ঘোষিত হওয়ায় প্রশ্ন ওঠে, কেন অন্যান্য দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী থাকবে? তার জবাবে লেভিট বলেন, “বিশ্বের অন্যান্য দেশের ট্রাম্পের ওপর আস্থা আছে। তিনি হচ্ছেন ‘The Negotiator in Chief’ (দ্য নেগোশিয়েটর ইন চিফ — প্রধান আলোচক)।”

তিনি আরও বলেন, “অন্যান্য দেশগুলো আদালতের এই রায়কে ‘ridiculous’ (অযৌক্তিক ও হাস্যকর) বলে মনে করছে। তারা বুঝে ফেলেছে এটা কতটা অবাস্তব।”

ট্রাম্প প্রশাসনের আইনি লড়াই নিয়ে তিনি বলেন, “আমরা এই মামলায় জয়লাভ করব বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। প্রয়োজনে আমরা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত যাব।”

লেভিট আরও দাবি করেন, ট্রাম্পের বাণিজ্য প্রতিনিধি আজ সকালে বেশ কয়েকটি দেশের পক্ষ থেকে আশ্বাস পেয়েছেন যে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনা চালিয়ে যাবে।

এর আগেই আদালতের রায় মার্কিন প্রশাসনের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে, যেখানে বলা হয়েছে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা সীমাহীন নয় এবং তিনি ‘emergency powers law’ (জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইন) ব্যবহার করে যেভাবে একতরফাভাবে শুল্ক আরোপ করেছেন, তা আইনসঙ্গত নয়।

তবুও হোয়াইট হাউস জোর দিয়ে বলছে, এই রায়ের বিরুদ্ধে তারা আপিল করবে এবং প্রয়োজন হলে বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালতে নিয়ে যাবে। একইসঙ্গে তারা বিশ্বের দেশগুলোকে বোঝাতে চায় যে, আলোচনার দরজা এখনও খোলা এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আলোচনায় সফল হবেন — এমনটাই তাদের বিশ্বাস।

2 মাস ago (19:58, 29 মে 2025)

ট্রাম্পের শুল্ক আদেশ অবৈধ ঘোষণা, আদালতের রায়ে বড় ধাক্কা হোয়াইট হাউসের জন্য

যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফেডারেল আদালত সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জারিকৃত শুল্ক আদেশগুলোকে অবৈধ ঘোষণা করেছে, যা তার প্রশাসনের অর্থনৈতিক নীতিতে বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

কে দায়ের করেছিল মামলা?

আদালত দুটি পৃথক মামলাকে একত্র করে একক রায় দিয়েছেন। মামলাগুলোর একটি দায়ের করেছিল কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান—তাদের মধ্যে রয়েছে Terry Precision Cycling এবং Genova Pipe-এর মতো কোম্পানিগুলো। অন্যদিকে, ওরেগন এবং নিউ ইয়র্কসহ একাধিক মার্কিন অঙ্গরাজ্য ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল।

প্রতিষ্ঠানগুলো দাবি করেছে, ট্রাম্পের আরোপিত শুল্কের কারণে তারা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একইসঙ্গে, অঙ্গরাজ্যগুলো বলছে, আমদানি ব্যয়ের কারণে তাদের সরাসরি আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।

কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে?

আদালতের দলিলে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর একাধিকবার জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন এবং সেই সূত্র ধরে বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করেন। তিনি কংগ্রেসের অনুমতি না নিয়ে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে এসব শুল্ক আরোপ করেন।

এই প্রসঙ্গে আদালতকে মূল্যায়ন করতে বলা হয় যে, ট্রাম্প কি [International Emergency Economic Powers Act (IEEPA)](আন্তর্জাতিক জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইন)-এর অধীনে এসব শুল্ক আরোপ করতে পারেন কিনা।

উল্লেখ্য, IEEPA আইন প্রেসিডেন্টকে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে থেকে আসা অস্বাভাবিক হুমকির মোকাবেলায় ব্যাপক ক্ষমতা প্রদান করে।

আদালতের রায় কী বলেছে?

এই মামলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো আদালতের চূড়ান্ত রায়। আদালত রায়ে জানিয়েছে, ট্রাম্পের জারি করা শুল্ক আদেশ “IEEPA আইন অনুযায়ী প্রেসিডেন্টকে প্রদত্ত কোনো ক্ষমতার আওতায় পড়ে না।”

রায়ে আরও বলা হয়, “IEEPA আইন বিশ্বব্যাপী, প্রতিশোধমূলক বা চোরাচালান-সংক্রান্ত কোনো শুল্ক আদেশ অনুমোদন করে না।”

শুধু মামলাকারীদের ক্ষেত্রেই নয়, আদালত স্পষ্টভাবে বলেছে: “যদি এসব শুল্ক আদেশ মামলাকারীদের জন্য অবৈধ হয়, তবে তা সকলের জন্যই অবৈধ।”

এই রায়ের ফলে হোয়াইট হাউসের সামনে এখন ১০ দিনের সময় রয়েছে, যাতে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে এই শুল্ক আদেশগুলো প্রত্যাহার করতে পারে।

এই ঐতিহাসিক রায় এখন ব্যবসা-বাণিজ্য ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে।